ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁদপুরে হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
চাঁদপুরে হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তরা

চাঁদপুর: চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মো. মাসুদ রানা (২৩) নামে এক যুবককে হত্যার দায়ে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশিদ এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- উপজেলার দক্ষিণ লধুয়া গ্রামের বাকরা কান্দার মো. আব্দুর রহিম বেপারীর ছেলে মো. ইয়ামিন বেপারী (২৪), পশ্চিম লুধুয়া গ্রামের মোল্লাবাড়ীর মৃত নোয়াব আলীর ছেলে মো. আব্দুল খালেক মোল্লা (৩২), একই গ্রামের বেপারীবাড়ীর মো. বারেক বেপারীর ছেলে মো. ফারুক ওরফে নবী (২৫), দক্ষিণ লুধুয়া গ্রামের আবুল কাসেম মাঝির ছেলে মো. সেলিম মাঝি (২২) ও পশ্চিম লুধুয়া গ্রামের মুন্সীবাড়ীর মৃত মোখলেছুর রহমান মুন্সীর ছেলে মো. আলী মুন্সী (২৮)।

হত্যার শিকার মো. মাসুদ রানা একই উপজেলার দক্ষিণ রাঢ়ী কান্দির দর্জিবাড়ীর মো. রবিউল দর্জির ছেলে। তিনি মতলব দক্ষিণ উপজেলা বাজারে বাদলের তেলের দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
 
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৭টার দিকে মাসুদ রানাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় মো. আলী। ওই রাত থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে আসামি মো. আলীকে স্থানীয় লোকজনের সামনে মাসুদ রানার কথা জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, রাতে অপর আসামিরাসহ আলফু প্রধানের বাড়ির পাশে রাস্তায় তারা আড্ডা দিয়েছে এবং দোকানে নাস্তা খেয়েছে। পরে সে ব্রিজের কাছে এসে তাদের রেখে চলে যায়।

এরপর মাসুদ রানার বাবা ছেলেকে না পেয়ে ১৪ অক্টোবর মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর খোঁজাখুজি করে ১৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী গোয়াল ভাওর ওহাব নামে এক ব্যক্তির ডোবা থেকে মাসুদ রানার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরনের জামা কাপড় থেকে মরদেহ মাসুদের বলে শনাক্ত করে তার পরিবার।  

আসামিদের জবানবন্দি ও মাসুদ রানার বাবার বক্তব্য থেকে জানা যায়, মাসুদ রানার কর্মস্থলে (দোকানে) ইয়ামিন বেপারী ২০০৭ সালে ঢাকা থেকে একটি মেয়ে নিয়ে আসে। ওই সময় পুলিশ ওই মেয়ে এবং ইয়ামিনকে আটক করে আদালতে পাঠায়। পরে ইয়ামিন ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পায়। সেই থেকে মাসুদ রানা ইয়ামিনকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে সন্দেহ করে তাদের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাকী আসামিদের সহায়তায় ইয়ামিন বেপারী তার ঘরে গলায় লুঙ্গি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মাসুদকে হত্যা করে এবং গোয়াল ভাওর ডোবার মধ্যে মরদেহ ফেলে দেয়।

এ ঘটনায় মাসুদ রানার বাবা রবিউল দর্জি মতলব উত্তর থানায় ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় উল্লেখিত আসামিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সময়ের মতলব উত্তর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আক্রাম হোসেন মজুমদার ও আব্দুল ওহাব ২০০৯ সালের ৩০ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু বাংলানিউজকে বলেন, সরকার পক্ষ দীর্ঘ ১০ বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এতে আসামিদের জবানবন্দি ও অপরাধ স্বীকার করায় উল্লেখিত ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।

এছাড়া একই মামলার আরো ৩ আসামি কামাল হাওলাদার (৩০), মো. কেরামত আলী মোল্লা (৫৫) ও মো. চেরাগ আলী মোল্লাকে (৫২) খালাস দেওয়া হয়।

সরকার পক্ষের সহকারী আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন দেবাশীষ কর মধু।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮/আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।