ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শহীদ মিনার নির্মাণ করলো ‘স্বপ্ন নিয়ে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
শহীদ মিনার নির্মাণ করলো ‘স্বপ্ন নিয়ে’ লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নে শহীদ মিনার নির্মাণ করলো ‘স্বপ্ন নিয়ে’/ ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: পূর্ব চরসীতা একটি প্রত্যন্ত গ্রামের নাম। পিছিয়ে পড়া গ্রামটি লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নে। এ গ্রামে পাশাপাশি দু’টি বিদ্যালয়।

একটি প্রফেসর এটিএম আইউব মডেল স্কুল, অপরটি লম্বাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬শ’ শিক্ষার্থী।

একুশে ফেব্রুয়ারি এলে ওইসব শিক্ষার্থীরা নিজেদের নির্মিত কলাগাছ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতো। বছরের পর বছর এভাবে চলতে থাকলেও শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

অবশেষে বিষয়টি নজরে আসে ‘স্বপ্ন নিয়ে’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। পরে তারা উদ্যোগ নেয় শহীদ মিনার নির্মাণের। যথাযথ উদ্যোগ, ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় নির্মিত হয় শহীদ মিনার। আসছে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কলাগাছ নয়, স্কুল মাঠে ইট-পাথরে নির্মিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী। শহীদ মিনার তৈরি হওয়ায় মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এটি নির্মাণ হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে।

ওই গ্রামে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় দু’টিতে শহীদ মিনার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন সংগঠনের কয়েকজন যুবক।

তারুণ্য-উদ্যম-শক্তি আর মনোবল নিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানবতার কল্যাণে ব্যতিক্রমধর্মী কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেছে ‘স্বপ্ন নিয়ে’ সংগঠনটি। গত বছরের শেষের দিকে ‘স্বপ্ন নিয়ে’র যাত্রা শুরু হলেও এটি তাদের প্রথম উদ্যোগ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।  

স্বপ্ন নিয়ে’র উদ্যোক্তা, আ হ ম ফয়সল, মীর তানভীর, আরাফাত হোসেন, আশরাফুল আলম হান্নান, পারভেজ অনিক ও আনোয়ার পাটোয়ারীসহ বেশ কয়েকজনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে সংগঠন।

উদ্যোক্তারা জানান, শহীদ মিনারটি নির্মাণে খরচ যাই হোক এটার ব্যাপকতা অনেক। আমাদের এ ধরনের উদ্যোগ দেখে শিক্ষার্থীরা বড় হয়ে সমাজে ভালো, সুন্দর ও কল্যাণকর কিছু একটা করার ইচ্ছা জাগ্রত হবে। সমাজে সবকিছু সরকার করবে এ ভাবনাটি অমূলক, সবাই যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে এলেই অন্যরকম একটি সমাজ তথা দেশ গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন তারা।  

প্রফেসর এটিএম আইউব মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীরা কলাগাছ ও কাঁঠ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতো। ‘স্বপ্ন নিয়ে’ প্লাটফর্ম আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার তৈরি করে দেওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ গ্রামবাসী আনন্দিত। এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারি হবে আমাদের জন্য নতুনভাবে উদযাপনের বছর।

রামগতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা বাধ্যতামূলক হলেও অনেক স্কুলেই স্থায়ী শহীদ মিনার নেই। উপজেলায় ৩২টি মাধ্যমিক ও মাদরাসার মধ্যে ৯টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। সেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদের সভায় প্রস্তাব রেখেছি। ‘স্বপ্ন নিয়ে’ সংগঠনের শহীদ মিনার নির্মাণ সত্যিই মহৎ উদ্যোগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
এসআর/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।