ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাগরিকত্ব পাচ্ছেন লুসি হল্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৮
নাগরিকত্ব পাচ্ছেন লুসি হল্ট ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট

ব‌রিশাল: বাংলাদেশকে ভালোবেসে দীর্ঘ ৫৭ বছর কাজ করা ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমান।

তিনি বলেন, লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে বাংলাদেশ নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে খুব দ্রুতই বাংলাদেশের নাগরিকত্বের কাগজপত্র হাতে পেতে যাচ্ছেন তিনি।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ১৫ বছরের জন্য লুসি হল্টকে ফি মুক্ত ভিসা দেওয়া হয়। তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়।  

ডিসি হাবিবুর রহমান জানান, সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের চারদিনের মাথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় লুসি হল্টকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

৫৭ বছর আগে অক্সফোর্ড মিশনের একজন কর্মী হিসেবে ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন। সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মানুষের প্রতি। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাহতদের সেবা করেছেন জীবনের মায়া ত্যাগ করে। দেশ স্বাধীনের পরও বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি তিনি। ভালোবেসেছেন এখানকার মানুষকে। তাই মৃত্যুর পরও প্রিয় বরিশালের মাটিতেই সমাহিত হতে চান তিনি।  

প্রতিবছর ফি দিয়ে ভিসা নবায়নের সমস্যা হওয়ার ফলে ভিসা ফি মওকুফসহ বাংলাদেশি নাগরিকত্বের জন্য দাবি জানিয়েছিলেন এই মহীয়সী নারী। ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসন থেকে লুসির এ আবেদন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তবে এটা তাদের আওতাভুক্ত না হওয়ায় কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। বর্তমান জেলা প্রশাসক আসার পরপরই নতুন করে আবেদন তৈরি করেন এবং তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান।

এর কয়েক সপ্তাহ পর লুসি হল্টের ভিসা ফি মওকুফ করে ১৫ বছরের অগ্রিম ভিসা দেওয়া হয়।

১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম নেওয়া লুসির  বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। ১৯৪৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা লুসির বড় বোন রুট অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে ব্রিটেনেই বসবাস করেন।  

লুসি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন এবং যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। কর্মজীবন থেকে ২০০৪ সালে অবসরে যাওয়া লুসি এখনও দুস্থ শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি শিশুদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করছেন।  

৫৭ বছর ধরে এদেশে থেকে বরিশাল ছাড়াও যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে কাজ করেছেন তিনি। জীবনের দীর্ঘ সময় এখানে কাটিয়েছেন, চিরনিদ্রায় শায়িতও হতে চান এই বাংলার মাটিতেই।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়া‌রি ১২, ২০১৮
এমএস/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।