ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

'শঙ্কা’ কাটেনি ফুল ব্যবসায়ীদের

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৮
'শঙ্কা’ কাটেনি ফুল ব্যবসায়ীদের শাহবাগ বটতলার ফুল মার্কেটে ব্যস্ততা। ছবি বাংলানিউজ

ঢাকা: ফাল্গুনে প্রকৃতিই শুধু রঙ ছড়ায় না, রঙ ছড়ায় প্রতিটি প্রাণও। দোলা দেয় মানুষের মনে। এ সময় বর্ণিল প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে নিজেকে রাঙিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে তরুণ-তরুণীরা। বাসন্তি রঙা পোশাকের সঙ্গে বাহারি ফুলে সেজে বসন্ত বরণের প্রস্তুতি চলছে।

রাজধানী জুড়ে চলছে ঋতু রাজ বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার নানা প্রস্তুতি। আর এ আয়োজনে পূর্ণতা দিয়ে থাকে ফুল।

পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে বর্ণিল শোভা বাড়াতে ফুল ব্যবসায়ীরাও নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তবে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিবে তা নিয়ে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা।  

সারা বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে সবেচেয়ে বেশি ফুলের ব্যবসা হয় তাদের। এরই মধ্যে অনেক অর্ড‍ারও পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এবার দুই উৎসবে কী পরিমাণ ফুল বিক্রি করবেন তার লক্ষ্যমাত্রাও ঠিক করেছেন তারা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি ঠিক থাকে, তাহলে অর্ডার, সাপ্লাই আর ফুল আমদানিতে কোনো ব্যাঘাত হবে না। রায়ের পর সহিংসতা না হওয়ায় এ ক্ষেত্রে কিছুটা চিন্তামুক্ত হলেও শঙ্কা এখনও কাটেনি ব্যবসায়ীদের।  
 
শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, যদিও ১২ তারিখের আগে ব্যবসার হাল বোঝা যাবে না, তবে এবার দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শঙ্কায় রয়েছি। রায়ের পর সহিংসতা হয়নি, কিন্তু রোববার থেকে পরিস্থিতি কেমন হয় তা তো জানি না। শুক্রবার বিএনপির বিক্ষোভ হলো, আর বৃহস্পতিবার  কোনো ফুলের গাড়ি আসেনি। এমন হলে ব্যবসা খারাপ হবে। এছাড়া দেখেন, বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। কিন্তু, দিন দিন বিনোদনের সুযোগ কমে যাচ্ছে। উৎসবে নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কড়াকড়ি আরোপ করে। ফলে উৎসব ঘিরে মানুষের মধ্যে আগ্রহ কমে যাচ্ছে। এখন আগের মতো আর ফুল বিক্রি হয় না।  

শাহবাগ বটতলার ফুল মার্কেটে ৫০টি ছোট বড় ফুলের দোকান রয়েছে। এছাড়া আরও ১০/১২ অস্থায়ী দোকানও রয়েছে। এবার পহেলা ফাল্গুন (১৩ ফেব্রুয়ারি),  ভালোবাসা দিবস (১৪ ফেব্রুয়ারি) ও একুশ ফেব্রুয়ারিকে (২১ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্র করে কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।  
এদিকে, পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে ফুলের দাম বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। তবে বিক্রেতারা জানান, এখনও ফুলের দাম তেমন বাড়েনি। দেশের পরিস্থিতি ও চাহিদার ওপর ফুলের দাম নির্ভর করবে। শাহবাগ বটতলার ফুল মার্কেটে ব্যস্ততা।  ছবি বাংলানিউজ
 
সরেজমিন দেখা যায়, চেরি, গাঁদা, জিপসি, বেলি, দেশি-বিদেশি, গোলাপ, ক্যালোনডোলা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ রং বেরং এর ফুলের সমারোহ শাহবাগ মোড়ে।  

উৎসবকে সামনে রেখে শাহবাগের স্থায়ী দোকানগুলোর পাশাপাশি রাস্তায় বসে ফুল বিক্রি করা নারী-শিশুদেরও ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা সাভারের সাদুল্লাহপুর, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, চুয়াডাঙ্গায় ফুলে অর্ডার দিয়ে রেখেছেন।  

ফুলের গাড়িগুলো নির্বিঘ্নে ঢাকা আসতে দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি জরুরি বলে জানান ব্যবসায়ী কবি আকাশ।  

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যে কোনো মাসের তুলনায় ভালো ফুল বিক্রি হয়। গতবার ভালো বিজনেস হয়েছে। এবার সারাদেশে ফুলের ফলন ভালো। দেশের পরিস্থিতি ভালো থাকলে ব্যবসা ভালো হবে।

বসন্ত উৎসব উদযাপন করতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ফুলের অর্ডার দিতে এসেছেন আকরাম হোসেন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অফিসে বসন্ত উৎসব উদযাপন করা হবে। তাই ফুলের অর্ডার দিতে এলাম। ফুলের দাম কিছুটা বেশি হলেও নাগালের বাইরে এখনও যায়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৯ ঘন্টা,ফেব্রুয়ারি ০৯,২০১৮
এমসি/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।