ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অপরিকল্পিত ঢাকার জন্য নগরবিদদের দায়ী করলেন পূর্তমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
অপরিকল্পিত ঢাকার জন্য নগরবিদদের দায়ী করলেন পূর্তমন্ত্রী বক্তব্য রাখছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ঢাকায় অপরিকল্পিত নগরায়নের জন্য অতীতের টাউন প্ল্যানারদের (নগর পরিকল্পনাবিদ) দায়ী করলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ডিআরইউ আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’-এ প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহর অপরিকল্পিত একটি নগরী।

এখানে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, স্যুয়ারেজের কোনো কিছুই ঠিক নেই। গুলশান, বনানী, ধানমন্ডিসহ কোনো আবাসিক এলাকাই পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়নি। এজন্য অতীতে যারা টাউন প্ল্যানার ছিলেন, তারা দায়ী। তারা তেজগাঁওকে শিল্প এলাকা বানিয়েছেন। অথচ তেজগাঁও এখন শহরের মধ্যখানে। আমরা পূর্বাচলকে সেরকম বানাবো না। পূর্বাচল হবে সত্যিকারের একটি স্মার্ট সিটি। সবকিছু হবে পরিকল্পিত।

ঢাকা শহরের চার দিকে অসংখ্য নদী-নালা থাকলেও সব দখল হয়ে গেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ৫৬টি খাল দখল করা হয়েছে। বালু নদীর পানিতে দুর্গন্ধ। তুরাগ নদীর কোনো চিহ্ন নেই।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, গত পাঁচ বছরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় অনেকগুলো প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছে। আরও অনেক নতুন প্রজেক্ট নেওয়া হচ্ছে। এখন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা আমাদের কাছ থেকে কমমূল্যে অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে পারছে। আমরা এরইমধ্যে উত্তরায় ৬ হাজার ৬৩৮টি অ্যাপার্টমেন্ট বানিয়ে বিক্রি করেছি।

ঝিলমিল প্রকল্পে ১৪ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট করা হবে জানিয়ে পূর্তমন্ত্রী বলেন, পূর্বাচলে ১৪২ তলা আইকন টাওয়ার নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। পূর্বাচলে ৭৫ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট করা হবে। এছাড়া ঢাকা শহরে যেখানে সরকারি জমি আছে, সেগুলো আর কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হবে না। সবগুলোতে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বহুতল ভবন নির্মাণ করে অ্যাপার্টমেন্ট বরাদ্দ দেওয়া হবে। আমরা পরিধি বাড়াতে চাই না। উন্নত বিশ্বের মতো আমরা উপরের দিকে যেতে চাই।  

মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে আগামী ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৩০ হাজার একর জমি নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন করা হবে। সেখানে এরইমধ্যে কয়েকটি কোম্পানি জমি নিয়েছে। সবগুলো অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন হলে দেশের দুই কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।  

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আর্থিক সক্ষমতা অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের এখন সরকারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার দরকার হয় না। আমরা ফ্ল্যাটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য মোহাম্মদপুর-লালমাটিয়া এলাকায় সরকারি জমিতে অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করছি। সেখানে বেসরকারি পর্যায়ে প্রতি স্কয়ার ফিটে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়। আমরা দিচ্ছি ৯ হাজার টাকায়। গুলশান-বনানীতে নেয় ২৫ হাজার টাকা। আমরা ১০ থেকে ১১ হাজার টাকায় দেবো। এতে ফ্ল্যাটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।

মন্ত্রী আশুলিয়া ও কেরানীগঞ্জে দু’টি আবাসন প্রকল্পের পরিকল্পনার কথাও জানান।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি বহুমুখী সমবায় সমিতির কেনা জমিতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বহুতল ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন। এছাড়া সেগুনবাগিচায় ডিআরইউর জমি বরাদ্দের বিষয়েও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।