ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আইএসে যোগ দিতে অন্য দেশ হয়ে সিরিয়ায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
আইএসে যোগ দিতে অন্য দেশ হয়ে সিরিয়ায় সিরিয়ায় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের মহড়া

ঢাকা: জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়াগামী বাংলাদেশির সংখ্যা খুবই স্বল্প। এরমধ্যে যারা সিরিয়া পাড়ি জমিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই সরাসরি বাংলাদেশ থেকে না গিয়ে অন্য দেশ হয়ে পৌঁছেছেন।

গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, আইএসে যোগ দিতে অন্তত ৫০ জন বাংলাদেশি সিরিয়া ও ইরাকে পাড়ি জমিয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একই পরিবারের ১২ সদস্য, জাপান থেকে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চিকিৎসক দম্পতি রয়েছেন।

যারা বেশিরভাগই বিদেশে অবস্থানকালে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন।

সাইফুল্লাহ ওজাকি, ডা. রোকন উদ্দিন খন্দকার, সিরিয়ার রাকায় মার্কিন বিমান হামলায় নিহত সাইফুল হক সুজন ও তার ভাই আতাউল হক সবুজের পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আরেক বাংলাদেশির নাম উঠে আসে। গত ১১ ডিসেম্বর নিউইয়র্কের ম্যানহাটন বাস টার্মিনালে বিস্ফোরণের দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আকায়েদ উল্লাহ।

যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশি সহোদর সাইফুল হক সুজন ও আতাউল হক সবুজ। ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর আইএসের কথিত রাজধানী সিরিয়ার রাকায় বিমান হামলায় কম্পিউটার প্রকৌশলী সাইফুল হক সুজন নিহত হন। তিনি আইএসের হয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের পরিকল্পনাকারী, হ্যাকিং কর্মকাণ্ড, নজরদারি প্রতিরোধ প্রযুক্তি ও অস্ত্র উন্নয়নের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

গোয়েন্দারা আরও জানান, সুজনের পুরো পরিবারই আন্তর্জাতিকভাবে জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত। চলতি বছরই স্পেনের বার্সেলোনার পর্যটন এলাকায় একটি সাদা ভ্যান চালিয়ে অন্তত ১৩ জনকে হত্যা করা হয়। এর আট ঘণ্টা পর দেশটির ক্যাম্বিলসের সমুদ্র সৈকতে একই ধরনের আরেকটি হামলা হয়। ওই হামলার অভিযোগে ২৩ সেপ্টেম্বর সুজনের বড় ভাই আতাউল হক সবুজকে গ্রেফতার করে স্পেন পুলিশ।

এদিকে, আইএস-সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের মতাদর্শকে অনুসরণ করে বাংলাদেশে ‘নব্য জেএমবি’ নামে জঙ্গি সংগঠনের আবির্ভাব হয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরীর হাত ধরে। তিনি কানাডা থেকে সিরিয়া যান এবং সেখানে দীর্ঘদিন অবস্থান করেন। তারপর ২০১৩ সালে দেশে ফিরে নব্য জেএমবি গঠন করেন। তার পরিকল্পনা এবং নির্দেশনাতেই ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখন পর‌্যন্ত খুব কম সংখ্যক বাংলাদেশি সিরিয়া গেছেন। বাংলাদেশ থেকে যারা সিরিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করেছেন তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আর যারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই অন্য দেশ হয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করেছেন।

তিনি বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পরিবারের ওপর নজরদারি রাখা হয়েছে। দেশত্যাগ করা জঙ্গি ও তাদের ঘনিষ্ঠদের বিষয়ে ইমিগ্রেশনে নজরদারি রয়েছে। যেন দেশে ঢুকতে গেলেই তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বোমা হামলার অভিযোগে গ্রেফতার আকায়েদ উল্লাহর বিষয়ে সিটিটিসি কর্মকর্তাদের ধারণা, আমেরিকা থাকাকালীন ইন্টারনেটের মাধ্যমেই তিনি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি বিস্ফোরক বানানোর প্রশিক্ষণও তিনি ইন্টারনেট থেকেই নিয়েছেন।

এ বিষয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, দেশে থাকা অবস্থায় আকায়েদের বিরুদ্ধে আমরা কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড পাইনি। আকায়েদের পরিবার, আত্মীয় স্বজনসহ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ এখনও শেষ হয়নি। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই বাছাই করার পরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।

বাংলাশে সময়: ০২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
পিএম/এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।