ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুদকে হাজির হতে সময় চাইলেন এসপি সুভাষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
দুদকে হাজির হতে সময় চাইলেন এসপি সুভাষ এসপি সুভাষ চন্দ্র সাহা।

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অজর্নের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় হাজির হতে এক মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেছেন পুলিশ সুপার (এসপি) সুভাষ চন্দ্র সাহা।

বুধবার ( ১৩ ডিসেম্বর) দুদকের নির্ভরশীল একটি সূত্র বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার দুদক কার্যালয়ে এসপি সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রীনা চৌধুরীর হাজির হওয়ার কথা ছিলো।

কিন্তু তারা হাজির না হয়ে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিতে আরো এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। তবে সূত্রের তথ্য মতে, কমিশন এখনো সময়ের ওই আবেদন মঞ্জুর করেনি।

সম্প্রতি অবৈধ সম্পদ অজর্নের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় পুলিশ সুপার (এসপি) সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রীনা চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক।

আর সেই তলবে পুলিশ সুপার (এসপি) সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রীকে বুধবার দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা করতে বলা হয়। এছাড়া চিঠিতে তাদের স্থাবর-অস্থাবর মালিকানা সংক্রান্ত দলিলাদি, ব্যাংক হিসাবের শুরু থেকে হালনাগাদ বিবরণী, দায়-দেনা ও আয়ের উৎস সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে বলা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে অর্জিত বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের যৌথ ব্যাংক একাউন্টে ১৯টি এফডিআর হিসাবে ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকার খোঁজ পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।   যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফলে চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে রাজধানীর বংশাল থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নাম্বার ৩৭। আর সুভাস চন্দ্র সাহা ও স্ত্রী রীনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কমিশন সেপ্টেম্বর মাসে মামলার অনুমোদন দেন।

এজাহার সূত্রে আরো জানা যায়, রাজধানীর বংশাল শাখায় ৬টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমান স্থিতি ২ কোটি ৮১ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৭ টাকা। এলিফ্যান্ট রোড শাখার ১টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত ১৮ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমান স্থিতি ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২ টাকা। ওয়ান ব্যাংকের যশোর শাখার ১২টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত ৫ কোটি ৪ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমান স্থিতি ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ৮৫৮ টাকা। মোট ১৯টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমানে টাকার পরিমাণ ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকা। আর ২০১৩ সালের ২৬ মে থেকে ২০১৭ সালের ২২ মে এই এফডিআরগুলো খোলেন সুভাষ চন্দ্র সাহা।  

অন্যদিকে আসামি সুভাষ চন্দ্র সাহা খুলনা কর অঞ্চলের সার্কেল ১৮ কুষ্টিয়ার আয়কর নথি, যার ই-টিআইএন: ২৬৭৮৪০৫৫৪০২৪ (টিআইএন: ৪২৭-১১৯-৬০৮২)।   স্ত্রী রীনা চৌধুরীও খুলনা কর অঞ্চলের সার্কেল ১৮ কুষ্টিয়ায় আয়কর নথি খোলেন। যার ই-টিআইএন: ৫৩৮২৬৩৩৯৮৩২৭ (টিআইএন: ১৯০-১০৪-৬০৯৪)। তবে তাদের যৌথ এফডিআরের মধ্যে ২০১৬-২০১৭ করবর্ষ পর্যন্ত অর্জিত এফডিআরগুলোর স্থিতি ও তা অর্জনের উৎসের বিষয়টি ২০১৬-২০১৭ করবর্ষ পর্যন্ত দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি।

এমনকি ২০১৬-২০১৭ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের পরে খোলা এফডিআর হিসাবগুলোতেও জমাকৃত অর্থের সমপরিমাণ টাকা ২০১৬-২০১৭ করবর্ষের দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ সুভাষ চন্দ্র সাহা পুলিশ বিভাগে চাকরিকালীন বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত  ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকার উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
এসজে/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।