ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এমপি মমতাজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এমপি মমতাজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলা

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঝুমা আক্তারের (১৩) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ৫দিন পর হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলায় আসামী করা হয়েছে ঝুমার আশ্রয়দাতা স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের ভাই ইবারত হোসেন, তার স্ত্রী ফরিদা বেগম ও ছেলে ফিরোজকে।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এ ঝুমার বাবা রিয়াজুল শেখ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

অভিযোগটি আমলে নিয়ে সিঙ্গাইর থানাকে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক শাকিল আহম্মেদ।

নিহত ঝুমা আক্তার সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের মেদুলিয়া গ্রামের কৃষক রিয়াজুল শেখের মেয়ে। গত সাড়ে তিন বছর ধরে ইবারত হোসেনের জয়মন্টপ গ্রামের বাড়িতে ঝুমা আশ্রিতা হিসাবে থাকতো। ইবারত হোসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সংগীত শিল্পী মমতাজ বেগমের বড় ভাই। ইবারত নিজেও গান-বাজনার সঙ্গে জড়িত।  

গত শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ইবারত হোসেনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে ফিরোজের শয়ন কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় ঝুমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঝুমা ইবারতের বাড়িতে গৃহাস্থালি কাজের পাশাপাশি লেখাপড়া ও গানবাজনা শিখতো। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঝুমাকে গান গাইতে নিয়ে যেতেন ইবারত। মাঝে মধ্যেই ওই বাড়িতে গানবাজনা, মদের আসর ও মেয়েদের আড্ডা বসাতেন তিনি। ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঝুমাকে এসব আসরে গান গাইতে চাপ সৃষ্টি করতেন ইবারত ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম।  

প্রায়ই ইবারত ও তার ছেলে ফিরোজ ঝুমার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাতেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এসব বিষয় প্রকাশ করে দেওয়ার আশঙ্কায় পরিকল্পিতভাবে ঝুমাকে হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া যে ঘর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ঘরের দরজা খোলা, লাশের ঘার পিছনের দিকে বাঁকানো, পা চেয়ারে ঠেকানো অবস্থায় পাওয়া যায়। অপরদিকে ঘটনার পর ইবারতের স্ত্রী ফরিদা বেগম ও ছেলে ফিরোজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আরও স্পস্ট হয়ে উঠেছে।

ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ইবারত হোসেন, বোন সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ও তার পরিবারের কোনো সদস্য নিহত ঝুমার পরিবারের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেননি। এমনকি কেউ সান্ত্বনা দিতেও আসনেনি বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, মামলা সম্পর্কে এখনো কিছুই জানি না। মামলা হয়ে থাকলে আদালতের আদেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। অন্যান্য বিষয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানান ওসি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।