ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঘর পালানো মেয়ের বিয়ে দিয়ে বিপাকে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
ঘর পালানো মেয়ের বিয়ে দিয়ে বিপাকে! ছবি: প্রতীকী

মানিকগঞ্জঃ ঘর পালানো প্রেমিকার সঙ্গে প্রেমিকের বিয়ে দিয়ে বেজায় বিপাকে পড়েছেন কাজী। বাড়তি পয়সার লোভ, ভয়-ভীতি বা অনুরোধে ঢেকি গেলা যে উচিত হয়নি তা বেশ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন তিনি।

তার মাথার ওপর এখন ঝুলছে বাল্য বিয়ে পড়ানোর আইনি খড়গ। সঙ্গে সদ্য বিবাহিত প্রেমিক আর তার সাঙ্গ-পাঙ্গ সাক্ষীদের নাকের ডগায়ও শ্রীঘরে যাওয়ার পয়গাম।

মেয়ের বয়স কম হওয়ায় সরকারি রেজিস্ট্রি খাতায় বর ও কনেসহ তাদের অভিভাবকদের সাক্ষর থাকলেও বাকি সব তথ্য পূরণের ঘরগুলো শূন্যই রেখেছেন কাজী। এমনকি বিয়ের মোহরানার উল্লেখও নেই রেজিস্ট্রি খাতায়।

সব শুনে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহাদৎ খন্দকার বাংলানিউজকে বলেন, অবশ্যই এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লাগামহীন এমন নাটকীয়তার শুরু হয় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রী ঘর পালানোর পর। কৃষ্ণপুরের ওই ছাত্রী ঘর ছাড়েন গত ৩ নভেম্বর।

পরে বাড়িতে ফিরিয়ে এনে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন স্থানীয়রা। ৬ নভেম্বর মধ্যরাতে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামে স্থানীয় কাজী জালাল উদ্দিন ওই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।

ছাত্রীর মা বাংলানিউজকে বলেন, ইচ্ছা ছিলো মেয়েকে অন্ততপক্ষে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করাবো। কিন্তু মেয়েটা ভুল করে বাড়ি পালালো। আর ওরা তো মেয়ের বিয়েই দিয়ে দিলো।

সরেজমিনে ছেলের বাড়িতে গেলে বিয়ের উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। তবে এ বিষয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কাটিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিজ উদ্দিন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সে একজন শিক্ষার্থী জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এই মেয়ের বয়সও এর চেয়ে বেশি নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের আর এক শিক্ষক বলেন, সরকার বাল্যবিয়ের পক্ষে নয়। বাল্যবিয়ের কারণে বহু মেয়ের জীবন অকালে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছোট বয়সে তারা ভুল করলেও আমাদের উচিত এর বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

কাজী জালাল মিয়া বলেন, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির অনুরোধে বিয়ে পড়াতে বাধ্য হই। তবে সরকারি রেজিস্ট্রি খাতা শূন্য রেখে বিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সই নেওয়াটা উচিত হয়নি।

স্থানীয় জিন্নাতুর রহমান জিন্নাহ, ফজর আলী খলিফা ও নয়া মিয়াসহ আরও কয়েকজনের অনুরোধে তিনি ওই বিয়ে পড়াতে যান বলেও জানান কাজী জালাল মিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।