ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অকাল বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
অকাল বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসী বৃষ্টির পর রাজধানীর রাস্তা। ছবি: মহসিন হোসেন

ঢাকা: দুদিনের অকাল বৃষ্টিতে রাজধানীর বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে বৃষ্টি শুরু হয়ে রোববার দুপুর পর্যন্ত চলে। সন্ধ্যায় ফের শুরু হয় মৃদু বর্ষণ। রাতেও বৃষ্টি ঝরার সম্ভাবনা আছে। তবে সোমবার থেকে বৃষ্টি কমে রোদ দেখা দিতে পারে বলে জানানো হচ্ছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সকালে অফিসগামী ও স্কুলগামীদের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়। বাসা থেকে বের হয়েই কর্দমাক্ত রাস্তায় কারো জুতা, কারো কাপড় নষ্ট হওয়ার চিত্র চোখে পড়ে।


 
অলি-গলিতে খোঁড়াখুড়ি তো আছেই, তার সঙ্গে শুষ্ক মৌসুমের জমে থাকা ধুলাবালুতে বৃষ্টির পানি মিশে কাদা হয়ে গেছে। ছোট ছোট গর্তে জমে আছে পানি। রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে চলার সময় চলন্ত গাড়ির চাকায় ছিটকে ওঠা পানিতে অনেকেরই কাপড় নষ্ট হতে দেখা যায়।
 
মিরপুর রোডের ল্যাবএইডের সামনে একজন পথচারী রাস্তা পার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাতে বাজারের ব্যাগ ছিল। পাশ দিয়ে একটি গাড়ি দ্রুত গতিতে চলে যাওয়ায় তার জুতা ও প্যান্ট নষ্ট হয়ে যায়।
 
বৃষ্টির পর রাজধানীর রাস্তা।  ছবি: মহসিন হোসেনকলাবাগান বশির উদ্দিন রোডের পুরোটাই এখন খানাখন্দে ভরা। গ্রীন রোডের কমফোর্ট হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়ে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কটিকে এখন রাজধানীর সড়ক বলেই মনে হয় না। গ্রামের মেঠোপথ বর্ষাকালে যেমন কর্দমাক্ত থাকে, ওই সড়কটির অবস্থাও এখন সে রকমই। কলাবাগানের অন্যান্য অলিগলিতেও কাদাপানি দেখা গেছে।
 
পান্থপথের মোড় থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, যাকে গ্রীন রোড বলা হয়, তাতেও মাঝে মধ্যে খানাখন্দ। কোথাও কোথাও পানি জমে আছে। পানি জমে আছে মিরপুর রোড ও ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডের ক্রসিংয়েও।  
 
ফ্লাইওভার পার হয়ে প্রগতি সরণি গিয়ে ঠেকেছে মৌচাক পর্যন্ত। এই সড়কটি দিয়ে যারা চলাচল করেন তারা গত ২ বছর ধরে ছিলেন মারাত্মক ভোগান্তিতে। সম্প্রতি সড়কটির কিছু অংশ কার্পেটিং করা হলেও সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। এরই মধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় শুরু হয়েছে পুনরায় ভোগান্তি। সড়কটির দক্ষিণ বাড্ডায় ইউলুপ নির্মাণ কাজ চলছে ধীর গতিতে। ফলে সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকতে দেখা যায়। রামপুরা ব্রিজের উত্তর দিক থেকে মধ্যবাড্ডা পর্যন্ত কাদা আর পানিতে একাকার।
 
গুলশান ও বনানী লেকের পূর্ব পাড়ে লেকসাইড সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। এই সড়কে এখন মোটরবাইক আর রিকশা ছাড়া অন্য যানবাহন চলে না। রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তে পানি জমে আছে। হাতিরঝিল থেকে যারা গুলশান-২ কিংবা বারিধারা আসেন তারা বিকল্প সড়ক হিসেবে এই সড়কটি ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু সড়কটির বেহাল দশার কারণে কোনো যানবাহন সড়কটি ব্যবহার করছে না।
 
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা, দক্ষিণ বাড্ডার অলিগলির অবস্থা খুবই খারাপ। খারাপ অবস্থা বাসাবো মাদারটেক এলাকার অলিগলির। প্রতিটি সড়কে ছোট ছোট গর্তে পানি জমে আছে। কাদাপানিতে একাকার হয়ে আছে কোথাও কোথাও।
 
বৃষ্টির পর রাজধানীর রাস্তা।  ছবি: মহসিন হোসেনঢাকা মেডিকেল কলেজের দক্ষিণ পাশে যেখান থেকে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভারে ওঠা হয়, সেই সড়কটির উত্তর পাশের অংশে বেশ কিছুটা স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। তারপাশেই চানখারপুল এলাকার রাস্তার বিভিন্ন অংশে গর্তে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
 
গুলিস্তান ফায়ার সার্ভিসের পাশ দিয়ে বংশালের দিকে যে সড়কটি গেছে তারও বিভিন্ন অংশে খানাখন্দ রয়েছে। বংশাল, আলু বাজার, বাদামতলী এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই এলাকার অলিগলির জায়গায় জায়গায় গর্তে পানি জমে থাকায় গত দুদিন পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
 
মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ থেকে বাঁশবাড়ি রোড হয়ে জিগাতলা পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। গত দুদিনের বৃষ্টির পর এখন ওই সড়ক দিয়ে পায়ে হাঁটা যেমন কষ্টকর, তেমনি যানবাহন চলতেও সমস্যা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এমএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।