ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্বাবলম্বী হচ্ছেন মিস্‌ড কলে পণ্য পৌঁছানো ভুট্ট

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৭
স্বাবলম্বী হচ্ছেন মিস্‌ড কলে পণ্য পৌঁছানো ভুট্ট ফোনে অর্ডার পাওয়া খাদ্যপণ্য দোকানগুলোতে সরবরাহ করছেন ভুট্ট। ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: নিজের চেষ্টা ও সকলের সহযোগিতায় এবার মিনি ফ্যাক্টরি গড়েছেন মিস্‌ড কলে পণ্য পৌঁছানো নীলফামারীর সৈয়দপুরের সেই প্রতিবন্ধী ভুট্ট (৩০)। সেখানে তৈরি চিপস্, আচার, চিড়াভাজা, চাটনি, চানাচুর ও ডালভাজাসহ খাদ্যপণ্য ফোনে অর্ডার পাওয়া দোকানগুলোতে সরবরাহ করছেন।

আর এর মধ্য দিয়ে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াইয়ে আরও একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই সংগ্রামী যুবক।

জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী সৈয়দপুর পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ার পারভেজ আলম ভুট্ট।

দরিদ্র বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ছোট সন্তান ভুট্টর পায়ে ভর করে দাঁড়ানোর শক্তি ও সামর্থ্য নেই, তবুও থেমে থাকেননি। মোবাইল ফোনে মিস্‌ড কলে অর্ডার নিয়ে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে জীবন সংগ্রাম শুরু করেন তিনি।  

ভুট্টর মিস্‌ড কলে পণ্য পৌঁছানোর সংবাদটি বাংলানিউজে প্রকাশের পর সহযোগিতার হাত বাড়ান সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন সরকার। গত ১৪ সেপ্টেম্বর পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয় তাকে। ওই টাকায় এলাকার দু’টি কক্ষে দুলাভাই মিস্টারকে নিয়ে মিনি ফ্যাক্টরিটি চালু করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের ঢেলাপীর, কাজীরহাট, হাতিখানা, মিস্ত্রিপাড়া, রসুলপুর এলাকাসহ বাজারের বেশ কিছু দোকান থেকে অর্ডার পান ভুট্ট। ‌এরপর হাতের শক্তিতে ভর করে ছোট্ট গাড়ি চালিয়ে সেসব দোকানে বিলি করছেন ওই খাদ্য সামগ্রীগুলো।

সারা দিনের আয় দিয়ে কোনোমতে সংসার চললেও একটুও হতাশ নন তিনি। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ব্যবসার প্রসার ও আয় বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াইয়ে আরও একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই সংগ্রামী যুবক।  ছবি: বাংলানিউজশহরের রসুলপুর এলাকার ইমরান স্টোরের মালিক ইমরান বলেন, ‘ভুট্ট অনেক পরিশ্রমী ও দৃষ্টান্ত অর্জনকারী যুবক, প্রতিবন্ধী হয়েও নানা ধরনের কাজ করছেন। ফোনে অর্ডার দিলে যথাসময়ে পণ্য পৌঁছে দেন আমার দোকানে। শারীরিক শক্তি-সামর্থ্য না থাকলেও প্রবল ইচ্ছেশক্তিতে প্রতিবন্ধকতা জয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সংগ্রামী মানুষ হিসেবে’।

ভুট্টু বলেন, ‘আমার মতো প্রতিবন্ধীরা সমাজে অবহেলিত। কিন্ত আমরাও তো মানুষ, আমাদেরও তো মানুষের মতো বাঁচার অধিকার রয়েছে। সুযোগ-সুবিধা ও কারিগরি শিক্ষা পেলে আমরাও অনেক ভালো কিছু করতে পারবো’।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বজলুর রশীদ তাকে হুইল চেয়ার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান ভুট্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।