ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গ্রেফতারকৃত নব্য জেএমবির হামলার টার্গেট ছিলো ঢাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৭
গ্রেফতারকৃত নব্য জেএমবির হামলার টার্গেট ছিলো ঢাকা সংবাদ সম্মেলন-কাওছার উল্লাহ আরিফ

বগুড়া: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতারকৃত নব্য জেএমবির উত্তরাঞ্চলের সামরিক প্রধান ও শুরা সদস্য মো. বাবুল আক্তার ওরফে বাবুল মাস্টারসহ চারজন বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করেছিলো। হামলার টার্গেট ছিলো রাজধানী ঢাকা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তারা ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু তার আগেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। 

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া জেলার পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
 
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা বাজার এলাকা থেকে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের ইন্টেলিজেন্স শাখা ও বগুড়া জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

 
 
এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি ৯ এমএম বিদেশি পিস্তল, ১ টি ম্যাগজিন, ১৫ রাউন্ড গুলি ও ৪টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু জব্দ করা হয়।  
 
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কসবা সাগরপুর জালেপাড়ার মৃত শফিকুল ইসলাম ওরফে শফু দর্জির ছেলে নব্য জেএমবির উত্তরাঞ্চলের সামরিক প্রধান ও শুরা সদস্য মো. বাবুল আক্তার (৪৫), নওগাঁর মান্দা উপজেলার পারইল আছির হাজীপাড়ার মৃত লোকমান আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন ওরফে মিস্ত্রি ওরফে মিজানুর রহমান (৩৯), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলোইগাছার মৃত আব্দুল করিমের ছেলে আলমগীর হোসেন ওরফে আরিফ (২৮) ও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার আড়াল গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে আফজাল হোসেন ওরফে লিমন (৩২)।  

গ্রেফতারকৃতরাপুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, বাবুল ২০০৩ সালে জেএমবিতে যোগ দেন। ২০১৩ সাল পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলে দাওয়াতি কার্যক্রম চালান। ২০১৪ সালে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। ২০১৭ সালের প্রথমদিকে উত্তরাঞ্চলের সামরিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০১৭ সালে মে মাসে নব্য জেএমবির শুরা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রংপুর জেলার কাউনিয়া থানাধীন খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার অন্যতম চার্জশিটভুক্ত আসামি তিনি।  
 
তিনি আরও জানান, ২০০৫ সালে বড় ভাই ইউসুফ হাজীর (২০১৬ সালে বগুড়ায় গ্রেফতার) মাধ্যমে জেএমবিতে যোগ দেন দেলোয়ার হোসেন। ২০১২ সাল পর্যন্ত জেএমবিতে অবস্থান করে নওগাঁ, নাটোর, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় দাওয়াতি কার্যক্রম চালান। ২০১৩ সালে নতুন জঙ্গি সংগঠন জুনুদ আত তাওহীদ আল খিলাফাহ-এ যোগ দেন। ২০১৪ সালে নব্য জেএমবিতে যোগ দিয়ে নওগাঁ, জয়পুরহাট, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলার দায়িত্বশীল হিসেবে কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলার বাঘমারা থানার আহম্মদীয়া মসজিদে বাংলাদেশে প্রথম আত্মঘাতী হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিলেন।  
 
দেলোয়ারের আপন ছোট ভাই মোয়াজ্জেম ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর নওগাঁ জেলার আত্রাই থানায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হন।  

এসপি মো. আসাদুজ্জামান জানান, দেলোয়ার ওই গ্রামের পলি আক্তারের বাসা ভাড়া নেন। সেখানে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত থেকে ইউরো বিস্ফোরক জেল, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করতেন তিনি।  

হ্যান্ড গ্রেনেড তৈরি করে দেলোয়ার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জঙ্গি আস্তানায় সরবরাহ করতেন। পাশাপাশি হিজরতকারী অনেক জঙ্গি সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন।  

এ জঙ্গি আস্তানায় নব্য জেএমবির তামিম চৌধুরী, মারজান, সাগর, রাজীব গান্ধী, বাবুল মাস্টার, রিপন, কাওছার, ওসমান, মমিন ও রজবসহ অনেকের নিয়মিত যাতায়াত ছিলো। এখান থেকেই ২০১৫-১৬ সালে উত্তরাঞ্চলে সংগঠিত বিভিন্ন টার্গেট কিলিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়।

এসময় জেলাল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল, সনাতন চক্রবর্তীসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

** নব্য জেএমবির উত্তরাঞ্চলের সামরিক প্রধানসহ গ্রেফতার ৪

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।