ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শীতের ছোঁয়াতেও কমছে না বাজারে দামের গরম!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
শীতের ছোঁয়াতেও কমছে না বাজারে দামের গরম! বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে আটটায় রাজধানীর নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের দৃশ্য; ছবি: মনি আচার্য্য

ঢাকা:কাঁচাবাজারে দামের অতি চড়া ভাব  গত এক মাসের বেশি সময় ধরেই দেখে আসছেন ক্রেতারা।  কোনো সবজিই ৬০ টাকা কেজি দরের নিচে বিক্রি হচ্ছে না। শীতের আগে ক্রেতারা আশা করেছিলেন কম দামে সবজি কিনতে পারবেন। কিন্তু এখনো ধারণার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। 

না বাড়লেও সবজির দাম একটা জায়গায় এসে থমকে গেছে মাত্র। অন্যসব বছরের এসময়টায় সবজির দাম যা হয়, সে তুলনায় এবারে সবজির দাম কল্পনাতীত বেশি।

এক কথায় বলে চলে, কাঁচাবাজারের দামের আগুন এখনো নেভেনি।

অন্যদিকে সবজির সঙ্গে তাল মিলেয়ে এখনো পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া।  এক মাস আগে দেশি পেঁয়াজের দর বেড়ে কেজি প্রতি ৮০ টাকায় উঠেছিল। এখনো তা কমেনি। আমদানি করা পেঁয়াজও সেই  ৬০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর নিউমার্কেট, আজিমপুর ও ধানমন্ডি ১৫ নাম্বারের কাঁচাবাজার ঘুরে সবখানে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

সবজির খুচরা বাজারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি ধনেপাতা ১৫০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, সিম ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, আলো ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, প্রতিপিস ফুলকপি ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিউ মার্কেটের সবজি বিক্রেতা রাব্বী বাংলানিউজকে বলেন, সবজির দাম এখন এক জায়গায় এসে থমকে আছে। না বাড়লেও কমছেও না। দাম কমবে কিনা বা কখন যে কমবে তাও বলা যাচ্ছে না। পাইকারি বাজার থেকে আমাদের এখনো বেশি দামেই সবজি কিনে আনতে হচ্ছে। তাই বেচতেও হচ্ছে বেশি দামে।

ধানমন্ডি ১৫ নাম্বারের কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির দাম আরও কিছুটা কমা প্রয়োজন। তাহলে খুচরা বাজারে এর সুফল পাওয়া যাবে। কিন্তু বেড়ে যাওয়া দাম  এখনো না কমায় সবজির কেনাবেচাও কমে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে সাতটায় রাজধানীর আজিমপুর বাজারের দৃশ্য;  ছবি: মনি আচার্য্য আজিমপুর কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা মো.কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কাঁচাবাজারের এমন একটি পণ্যও নেই যেটি কিনে স্বস্তি পাওয়া যাবে। দামের এই ঊর্ধ্বগতির জন্য এখন আর বাজারে আসতেই ইচ্ছা করে না।

নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা মো.ইশতিয়াক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, শীতের সময় মানুষ সবজি ও পেঁয়াজ কম দামে পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবার তা আর হচ্ছে না। বরং অন্য বছরের চেয়ে এবছর স্বাভাবিক দামের তুলনায় অনেক বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে।

এদিকে চালের বাজারেও দামের আগন জ্বলছে হুহু করে। চালের দাম বেড়েই চলেছে। কমার নামটি নেই। প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ২ টাকা বেড়ে বৃদ্ধি বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকায়। এছাড়া বিআর-২৮ কেজি প্রতি ৫০-৫৫ টাকা ও স্বর্ণা ও পারিজা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়।

সর্বশেষ খুচরা বাজার দর অনুযায়ী দেশি রসুন ৮০ টাকা, আমদানি করা রসুন ৮৫ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আমদানি করা মসুর ডাল কেজি প্রতি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে অপরিবর্তিত রয়েছে সব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও মাছ-মাংসের  দাম।

মাছের সর্বশেষ বাজারদর অনুযায়ী প্রতি কেজি কাতল মাছ ২৮০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ১৩০ টাকা, রুই মাছ ২৩০-৩০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৪০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০টাকা, শিং মাছ ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা ও বোয়াল ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজারে গত সপ্তাহের দরই চলছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগী ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কক মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৫০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা নভেম্বর ১৬, ২০১৭
এমএসি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।