ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে ধর্তব্যের মধ্যে নিই না

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে ধর্তব্যের মধ্যে নিই না সংসদে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: ফাইল ফটো

সংসদ ভবন থেকে: রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দেওয়া বক্তব্যকে ধর্তব্যের মধ্যে নেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সব কিছুতে ব্যর্থ। সফলতা তো তার জীবনে নেই। তাই তিনি সব সময় সবকিছুতে কেবল ব্যর্থতাই দেখবেন। বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্যই হচ্ছে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেছা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

খালেদা জিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও সেখানে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামে তো একটা কথা প্রচলিত আছে,’পাগলে কী না কয়, ছাগলে কি না খায়!’ এখন চক্ষু থাকতে যে অন্ধ তাকে দেখাবে কে? দেখেও যে দেখতে পারে না, তাকে দেখাবার কিছু নেই।

  এটা হচ্ছে একটা অনুভূতির ব্যাপার, এটা হচ্ছে একটা বোধ। বোধটা আছে কি না সেটাই ব্যাপার। তিনি (খালেদা জিয়া) সেখানে গেলেন, যেভাবে সাজসজ্জা নিয়ে ঢোলডগর, হাতি ঘোড়া সবই নিয়ে গেলেন। তাতে উনি কোন দুর্গত মানুষকে দেখতে গেলেন, না সেখানে কোন বরযাত্রী হিসেবে গেলেন, কি হিসেবে গেলেন? সেটা আমাদের কাছে বোধগম্য না। উনি মনে হচ্ছে একটা শোডাউন করা, গাড়ি দেখানোর উপরই মনে হয় তাদের দৃষ্টিটা বেশি ছিল। কারণ এটা তো বাস্তবতা মানবিক কারণে এদের সহযোগিতা করার পদক্ষেপ নেওয়ার অভ্যাস তো তাদের নেই।

এসময় প্রধানমন্ত্রী অতীতে রোহিঙ্গা আসার ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, একটু স্মরণ করিয়ে দিতে  চাই ১৯৯১ সালে আরেকবার এভাবে রোহিঙ্গারা স্রোতের মত বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তখন সেখানে গিয়েছিলাম তাদের অবস্থা নিজের চোখে দেখেছি। তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেখানে পৌঁছার আগেই আমরা গেছি। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এটা আমাদের রাজনীতিরই একটা অঙ্গীকার। আমর এই আদর্শ নিয়েই রাজনীতি করি। তারা (বিএনপি) যতোটা লোক দেখানোর জন্য করে আন্তরিকতার সঙ্গে ততোটা করে না। এটা সবাই জানে, বোঝে।

এসময় খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, উনি তো ব্যর্থতা দেখছেন, কারণ যে নিজে সব কাজেই ব্যর্থ হয় সেতো ব্যর্থতা দেখবে! ব্যর্থতা ছাড়া সফলতা দেখার মানসিকতা তো তার নেই। নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল, পারে নাই। মানুষ পুড়িয়ে পুঁড়িয়ে হত্যা করেছিল জনগণ সেটা ঠেকিয়ে দিয়েছে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়ছিল থাকতে পারে নাই। দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে বিতাড়িত করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বহু ব্যর্থতার ইতিহাস তার আছে। ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটা দখল করে রেখেছিলেন। কিছু নিয়ম-কানুন আইন ভঙ্গ করার কারণে যখন প্রশ্নটা উঠলো, তখন তিনি নিজেই মামলা করলেন। আর মামলা করেই ফেঁসে গেলেন। মামলা করে বাড়িও হারালেন। অঝোর ধারায় কাঁদলেন, কেঁদে আকুল হলেন। কিন্তু বাড়ি আর রাখতে পারলেন না। এই রোহিঙ্গা সমস্যা তাদেরই সৃষ্টি, তার স্বামী (জিয়াউর রহমান) এই সমস্যা সৃষ্টি করে গেছেন। কাজেই বিএনপি সব  ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়।

‘বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা’--একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ঘোলা পানিতে কিভাবে মৎস্য শিকার করবে, এই তালেই তারা ব্যস্ত থাকে। মানবিক কোনো গুণাবলি তাদের মধ্যে নেই। এটাই হলো বাস্তবতা। কাজেই তার বক্তব্যকে আমি ধর্তব্যের মধ্যে নিই না। আমার নীতি-আদর্শ থেকে আমরা সবকিছু মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করি।  যারা স্বাধীনতাবিরোধী, যারা  (বিএনপি-জামায়াত) মানুষ পুড়িয়ে মারে, তাদের কথাকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। আমরা আমাদের কাজ করে যাবো।

**রোহিঙ্গাদের কারণে কর্মহীন হওয়া মানুষদের সহায়তার আশ্বাস
**রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশ নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭

এসকে/এসএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।