ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ঘেরাও এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ঘেরাও এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা গুলশান-বনানী এলাকায় পুলিশের তল্লাশি- ছবি: শাকিল

ঢাকা: রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা বনানী-গুলশান। রাতদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকে এই আবাসিক এলাকা। এই বেষ্টনী ভেদ করে প্রবেশ করা সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়িতে গুলিতে খুন হন ব্যবসায়ী সিদ্দিক। যা গুলশান-বনানীর নিরাপত্তা বেষ্টনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বনানী চার নম্বর রোডের ১১৩ নম্বর বাড়িতে মুন্সি ওভারসিজ নামের রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে চারজন মুখোশধারী সন্ত্রাসী ঢুকে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।

এ ঘটনায়  সিদ্দিক হোসেন নামে প্রতিষ্ঠানের মালিক নিহত ও তিনজন কর্মচারি আহত হয়। আহতদের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত সিদ্দিকের মরদেহ ইউনাইটেড হাসপাত‍ালের মর্গে রাখা হয়েছে।
 
গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর  গুলশান-বনানীর নিরাপত্তা আরো জোরদার করা  হয়। ‌এলাকা দুটিতে বিশেষ বাস ও রিকশা সার্ভিস নামানো হয়। পুরো  গুলশান-বনানী সিসি টিভির আওতায় এনে জনসাধারণের চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
 
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, বনানীর প্রতিটি রোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাস্তার মাঝখানে চেক পয়েন্ট। সন্ধ্যা হলেই সড়কগুলোর মুখ ব্যারিকেট দিয়ে আটকানো থাকে। গুলশান-বনানী এলাকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্য। সড়কের মোড়, সড়কের উপর ও বাসা-অফিসের সামনে সিসি ক্যামেরা লাগানো। এত সব নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে মঙ্গলবার ঘটে গেল, দুর্বৃত্তের হামলা।
 
হামলার বর্ণনা দিয়ে নিহত সিদ্দিক হোসেনের গাড়িচালক এনামুল বাংলানিউজকে বলেন, আমি গাড়ির ভিতর বসে ছিলাম। সন্ধ্যা সাতটার পর পরেই বন্দুক হাতে চার জন মুখোশধারী অফিসের ভেতর ঢুকে। এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। ওই সময় স্যারের গায়ে গুলি লাগে। আমি দৌড়ে অফিস থেকে বের হয়ে আসি।  
গুলশান-বনানীর রাস্তায় সিসি ক্যামেরা- ছবি: শাকিল
নিরাপত্তার মধ্যে অস্ত্রসহ দুর্বৃত্তরা কিভাবে বনানী এলাকায় প্রবেশ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানা রোডে চেকিং পয়েন্টে দায়িত্বরত এসআই শাহেবুর বলেন, আমরা যথাসাধ্য নিরাপত্তা দেওয়া চেষ্টা করি। এরপরও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। তদন্ত করে বলতে পারবো। গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা এগুলো।  নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ঘাটতি নেই। পুরো এলাকায় সিসি টিভির আওতায়, নাশকতাকারীরা দ্রুত ধরা পরবে।
 
৪ নম্বর রোডে বনানী সোসাইটির নিরাপত্তা রক্ষ‍াকারী সদস্য বাদশা মিয়া বলেন, আবাসিক এলাকায় আদম পাঠানোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মুন্সি ওভারসিজ। এখানে প্রতিদিন অনেকে লোকের আনাগোনা ছিলো। শান্ত পরিবেশের বনানীর এই অফিসে সবসময় মানুষের হইচই লেগে থাকতো। কিন্তু এমন দুর্বত্ত হামলা হবে ধারণার বাইরে ছিলো।
 
২৭ নম্বর রোডের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, বনানী-গুলশান ভিআইপি আবাসিক এলাকা। এখানে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরাও থাকেন। এর আগে গুলশান হামলার কারণে এই এলাকার নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। নিরাপত্তা ঘাটতি যে রয়েছে, আজকে ঘটনা আরো সতর্ক হওয়ার আভাস দিলো। গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেনে নেওয়া যায় না। এসব এলাকার নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারকে আরো ভাবতে হবে।
 
এদিকে দুর্বৃত্তের হামলা বিষয় ও বনানীর নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিষয়ে জানার জন্য বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

**ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে খুন হলেন সিদ্দিক!
**বনানীতে অফিসে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি, নিহত ১

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এমসি/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।