ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভার খুলছে বৃহস্পতিবার   

শরিফুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভার খুলছে বৃহস্পতিবার    মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভার- ছবি: শাকিল  

ঢাকা: সকল জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) খুলছে রাজধানীবাসীর বহুল আকাঙ্ক্ষিত মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ সমন্বিত ফ্লাইওভার। 
 

নির্মাণকাজ শেষে হওয়ার পর কয়েক দফা উদ্বোধনের ঘোষণা দিলেও তা সম্ভব না হওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন ফ্লাইওভার সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। অবশেষে ঘটতে যাচ্ছে তাদের এই হতাশার সমাপ্তি।

 
 
এদিন দুপুর ১২টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ফ্লাইওভারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে দীর্ঘ ৬ বছরের অপেক্ষা-দুর্ভোগের অবসান ঘটিয়ে যান চলাচলে পুরোপুরি খুলে যাচ্ছে তিনভাগে নির্মিত ফ্লাইওভারটি।
 
সূত্র জানায়, এ বছর কয়েক দফায় ফ্লাইওভার উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হলেও যথাসময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে উদ্বোধনের কথা ছিলো এ ফ্লাইওভার। কিন্তু জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭২তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে ছিলেন। ফলে সে সময়েও উদ্বোধন সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
 
তবে এ যাত্রায় আর আশাহতের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানালেন ৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটারের এ ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল।
 
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৬ অক্টোবর দুপুর ১২টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ফ্লাইওভারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। ফলে এদিনই খুলে যাবে এ ফ্লাইওভার।
 
এদিকে রাজধানীর সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, মগবাজার রেলক্রসিং, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ এলাকায় আগে থেকেই লেগে থাকা যানজট ফ্লাইওভার নির্মাণকাজের কারণে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর রাস্তায় বৃষ্টির দিনে কাদা-পানি আর রোদের দিনে ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন মানুষ। রিকশা-ভ্যানগাড়ি-সিএনজির মতো ছোট ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ছিল নিত্য নৈমিত্তিক। নারী-শিশু ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ এ পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, আহত হয়েছেন।
 
ফলে মানুষের ভোগান্তি কমাতে গত বছরের ৩০ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ফ্লাইওভারের সাতরাস্তা-মগবাজার অংশের উদ্বোধন করেন। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর ইস্কাটন-মৌচাক অংশের যান চলাচল উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর গত ১৭ মে খুলে দেওয়া হয় ফ্লাইওভারটির এফডিসি মোড় থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত কারওয়ানবাজারমুখী অংশ।
 
 
এখন শান্তিনগর থেকে বাংলামোটর ও রামপুরা থেকে শান্তিনগর হয়ে রাজারবাগ অংশ উদ্বোধন হলেই তাদের সকল দুর্ভোগের অবসান হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
 
মগবাজার এলাকার বাসিন্দা রাশেদ বাংলানিউজকে বলেন, ৪/৫ বছর বহু জ্বালা সহ্য করছি। এখন খুবই ভালো লাগছে, এখানে আর কোনো যানজট থাকবে না, ভাবতেই ভালো লাগছে। তবে এখন সিটি করপোরেশনের কাছে আমাদের দাবি, এই রাস্তাটা (ফ্লাইওভারের নিচের সড়ক) যাতে ভালো থাকে সেজন্য যেন তারা ব্যবস্থা নেয়। আর এখানে রিকশাগুলো একেবারে মোড়ের থাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। রিকশাগুলো যাতে মোড়ে না রাখে সে জন্য কর্তৃপক্ষ যেন ব্যবস্থা নেয়। তাহলে এ এলাকা একেবারে যানজটমুক্ত হবে।
 
রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর ও তেজগাঁওয়ের যানজট নিরসন ও অবাধ যান চলাচল নিশ্চিত করতে ২০১১ সালে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্পটি গ্রহণ করে সরকার। পরে ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন।
 
এর পরে ধাপে ধাপে নকশা পরিবর্তন ও নির্মাণ ব্যয় বাড়তে থাকে এ প্রকল্পের । প্রথমে ২০১৪ সালের মধ্যে এ ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতায় ধাপে ধাপে মেয়াদও বাড়তে থাকে প্রকল্পের। এখন সবশেষে সম্পূর্ণরূপে আগামী বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে এ ফ্লাইওভার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
এসআইজে/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।