ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আরো এক লাখ রোহিঙ্গার দায়িত্ব নেবে তুরস্ক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
আরো এক লাখ রোহিঙ্গার দায়িত্ব নেবে তুরস্ক

ঢাকা: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে এক লাখের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আরো এক লাখের দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তুরস্ক।

দেশটির রাষ্ট্রদূত দেওরিম ওজতুর্ক রোববার (২২ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সঙ্গে বৈঠক করে নতুন করে আশ্বাস দিয়েছেন।
 
এ সময় আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার সরকার নতজানু হয়ে গেছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী।


 
আগেই এক লাখ রোহিঙ্গার বাসস্থানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা এক লাখ লোকের জন্য ২৪ হাজার ঘর করে দেবে। নতুন করে সাহায্যের জন্য আহ্বান জানিয়েছি। তারা আরো এক লাখ লোকের ঘর করার জন্য চিন্তাভাবনা করছেন।
 
‘এক হাজার থেকে ১২শ’ একরের জায়গায় তার্কিশ জোনে দুই লাখ লোকের জন্য থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা, টিউবয়েল-বিশুদ্ধ পানি, শেডসহ সব দায়-দায়িত্ব তারা নেবে। ৫০ হাজার শেড তৈরি করে দেবে’।
 
মন্ত্রী বলেন, ৩৫ হাজার ল্যাট্রিনের প্রয়োজন থাকলেও লোক বেড়ে যাওয়ায় ৫০ হাজার প্রয়োজন পড়বে। এর মধ্যে ইউনিসেফ ১০ হাজার, সরকার ও অন্যান্য এনজিও মিলে নয় হাজার করছে। তুরস্ক ২০ হাজার টয়লেট করে দেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
 
প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার ওভারলোডের কারণে স্থানীয় ৫-৬ লাখ লোক হিমশিম খাচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা যে ব্যবসা-বাণিজ্য, শাখ-সবজি করতেন, মাছ চাষ করতেন, পাহাড়ি ঢালে ধান চাষ করতেন- রোহিঙ্গাদের কারণে এ জায়গাগুলোতে স্থানীয়দের কর্ম নেই। অনেকের ঘরে খাবার নেই।
 
ওই এলাকায় গাছপালা প্রায় শেষ পর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, এক-দেড় মাস পর সেখানে লাকড়ি থেকে শুরু করে জ্বালানি বলতে কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা জ্বালানি সহায়তা চেয়েছি, তারা আশ্বস্ত করেছে।
 
মন্ত্রী জানান, বিশুদ্ধ পানির জন্য এক হাজার ডিপ টিউবয়েলের প্রয়োজন পড়বে। আমরা ১ হাজার করতে সক্ষম হয়েছি। আরো এক হাজার করবে ইউনিসেফ। তাদের অনুরোধ করেছি আরো দুই হাজার ডিপ টিউবওয়েল করে দিতে।  
 
‘আলোচনা করে যেটুকু মনে হয়েছে, আমরা পাবো বলে বিশ্বাস করি। ’
 
তুর্কি সরকার আমাদের যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কীভাবে ম্যানেজ করেন, আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাই। আমরা নভেম্বরের প্রথমে গিয়ে সরেজমিনে দেখে আসবো। আমাদের এ জায়গার সঙ্গে খাপ খেয়ে গেলে আমরা তাদের অনুরোধ করবো ওই জায়গার আদলে ঘরগুলো যেন করে দেন, মানুষ কষ্টে না থাকতে পারে।
  
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
 
‘আজকে মিয়ানমার সরকারের যে নতজানু অবস্থা, চারটিখানি কথা না। বার বার জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্ববাসী, আন্তর্জাতিক চাপ এতো বেশি হয়েছে, মিয়ানমার সরকার নতজানু হয়ে গেছে। দেখতে থাকেন, সহযোগিতা করেন, এক দিনের সমস্যা তো না, সমাধান হয়ে যাবে। সময় লাগবে আমরা পারবো’।
 
তুরস্ক ৩০ লাখ শরণার্থীর আশ্রয় ও ভরণ-পোষণ দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তুরস্কের রাষ্টদূত বলেন, আমরা দ্রুত বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের আরো সহযোগিতা বৃদ্ধি করবো। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্যও তারা কাজ করছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।