ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হেমন্তেও বর্ষার অকাল রোদনে স্থবির জনজীবন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
হেমন্তেও বর্ষার অকাল রোদনে স্থবির জনজীবন বর্ষার অকাল রোদনে স্থবির জনজীবন। ছবি: বাংলানিউজ

নেত্রকোনা: প্রকৃতির নিয়মে ঋতুর পালাবদলে চলছে হেমন্ত। শিশির ভেজা ফসল আর ঘাসে ঘাসে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে চারদিকে যখন ফুল-পাখিদের আনন্দে মাতোয়ারা থাকার কথা, তখনও অঝোর ধারায় কাঁদছে আকাশ।

সময় ফুরিয়ে গেলেও পরিবেশ-প্রকৃতি ছেড়ে যেতেই চাচ্ছে না মায়াবী বর্ষা। বরং, বেড়েই চলেছে ঘন কালো আকাশ আর বৃষ্টির দাপট!

নেত্রকোনার দশ উপজেলায় অবিরত ঝরে ঝাওয়া বৃষ্টি শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতেও অব্যাহত রয়েছে।

অসময়েও দাপটের সঙ্গে চলছে বর্ষার এ অকাল রোদন!

তবে টানা অতিভারী এ বর্ষণে স্কুল-কলেজ, অফিস আদালত থেকে শুরু করে জনজীবনের সর্বক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যাপক ছন্দপতন। লাগাতার বৃষ্টিতে কর্মবিমুখ হয়ে পড়েছেন মানুষেরা। বিশেষত চরম বিপদে পড়েছেন দিনমজুর শ্রেণীর লোকজন। কোথাও কর্মচাঞ্চল্য ও রোজগারের পথ না থাকায় তাদের দিন কাটছে অনাহারে।

পূর্বধলা উপজেলার রেলস্টেশন এলাকার ভাসমান চায়ের দোকানদার আফসার বাংলানিউজকে জানান, বৃষ্টিতে চা বিক্রি করতে পারছেন না তিনি। স্টেশন এলাকায় কয়েক কাপ চা বিক্রি হয় ট্রেনের ভেতরেই। কিন্তু বৃষ্টিতে যাত্রীদের তেমন দেখা নেই।

আয় না হলে পরিবার চলবে কেমন করে?- প্রশ্ন রেখে আফসার বলেন, ‘শরীর হিম হয়ে আসা বাতাসে অহেতুক চা নিয়ে ঘুরতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তারপরও কি আর করা? গরিবের বড় শত্রু তো তাদের পেট!’

সড়কে রিকশা রেখে ভেজা শরীরে স্টেশনে বসে কাঁপছিলেন ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক ফুল মিয়া। বৃষ্টিতে রোজগার না থাকায় মনের দুঃখে একা একাই চেচামেচিও করছিলেন তিনি।

ফুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘হারাডা দিন ভিজলাম, শ’ দেড়েক ট্যাহাও কামাই হইলো না। বুড়া-বুড়ি না হয় না খায়া থাকবাম। কিন্তু রিকশা মালিকের আমদানি দিয়াম কইত্তে?’  

নির্বিচারে গাছ কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করায় প্রকৃতির এমন বিরূপ আচরণ চলছে বলে মনে করেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ্ আল মামুন। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সবুজ বনায়ন ও বন রক্ষার বিকল্প নেই। এভাবে বন উজাড় হতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে’।

কবি প্রসেনজিৎ রাজন বলেন, ‘চিরচেনা ছয় ঋতুর পৃথক বৈশিষ্ট্য এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। গত বছরের মাঘ থেকে এখন কার্তিক মাস- দীর্ঘ এ দশমাস ধরেই বৃষ্টিধারা অব্যাহত রয়েছে। কার্তিকের প্রথম সপ্তাহ চলছে। তারপরও থেমে নেই আষাঢ়-শ্রাবণের বর্ষা’।

‘আকাশ কালো মেঘে ঢেকে থাকায় তিনদিন ধরে সূর্য আড়ালে। বৃষ্টিতে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষজন। কর্ম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, তারা চলবেন কিভাবে?’

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।