ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাস্তার কাজে এলাকাবাসীর আনন্দ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৭
রাস্তার কাজে এলাকাবাসীর আনন্দ  সংস্কার হতে যাওয়া রাস্তা

নারায়ণগঞ্জ : দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতের অনুপযুক্ত থাকলেও জাইকায় সহযোগিতায় শুরু হয়েছে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া বালুর মাঠের সড়কের কাজ। এ নিয়ে এলাকাবাসীর আনন্দের যেন অন্ত নেই। 

এ নিয়ে এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এক সময় বৃষ্টি ছাড়াই এ সড়কে চলাচল করতে খুব কষ্ট হতো।

রাস্তা এতো খারাপ ছিলো রিকশা পর্যন্ত চলাচল করতো না। আর দু’একটি চললেও ভাড়া দিতে হতো দ্বিগুন।  

১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জানান, জাইকার সহযোগিতায় এ সড়কের কাজ চলছে। প্রথমে ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করে তারপর মূল সড়কের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।

গত ৬ আগস্ট আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে চাষাঢ়া বালুর মাঠ সংলগ্ন ভাষা সৈনিক সড়কের সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী।  উদ্বোধনের সময় আইভী রহমান বলেছিলেন, জাইকার অর্থায়নে ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটির উন্নয়নের কাজ দ্রুতই সমাপ্ত হবে। সড়কটির দুইপাশে ড্রেন ও মানুষের চলাচলের জন্য ফুটপাতও করা হবে।
 
এই সড়কে নিয়মিত ঘটতো নানা দুর্ঘটনা। বৃষ্টি হলে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেড়ে যেতো। আর এ সড়কে পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও অসুবিধা হতো মানুষের। সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা মানুষ প্রতিনিয়তই সড়কটি সংস্কারের জন্য অনুরোধ করতেন।  
 
চাষাঢ়া বালুর মাঠ সড়ককের পাশে গড়ে উঠেছে নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও বিভিন্ন খাবারের দোকান। সড়কে লোকজনের যাতায়াত কম থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান দিন দিন গ্রাহক হারাচ্ছিলো। এই সড়কেই জেলার তিতাস গ্যাসের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। ভাঙা সড়ক দিয়ে অনেক কষ্ট করে প্রতিদিন অফিস করতেন তিতাসের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। নিজেদের কাজে গ্রাহকেরাও কষ্ট করে আসতেন সেখানে।

জানা গেছে, সড়কের বেহাল অবস্থার সুযোগে রাতের আঁধারে সেটি অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। মুমূর্ষু রোগীদের ঐ সড়কের পাশে অবস্থিত ইসলাম হার্ট সেন্টারে আনতে গেলে রোগীদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়ে।
 
হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ড জানান, “এই সড়কের অবস্থা অনেক খারাপ। কয়েকদিন আগে আমাদের সামনেই একটি রিকশা সড়কের গর্তে অনেক ক্ষতি হয়। এতে রিকশায় থাকা যাত্রীরা আহত হন। আমরা তাদের উদ্ধার করি। এরকম ঘটনা অহরহই ঘটছে এ সড়কে।
 
শহীদ মিনারের পাশে খাবারের দোকানের মালিক জব্বার জানান, ভাঙা রাস্তার কারণে এখানে এখন কাস্টমার খুব কম আসে। তবে এখন রাস্তার কাজ শেষ হলে আবারো সেই জমজমাট অবস্থা তৈরি হবে এখানে।
 
রশিদ নামে এক বাড়িওয়ালা জানান, কোনো রিকশা আমাদের বাড়ি পর্যন্ত আসেনা, দূরে নামতে হয়। আমরা তো ট্যাক্স দেই তবুও আমাদের এই দুর্ভোগ কেন? শহরের প্রাণকেন্দ্রের এ অবস্থা মানা যায়না।  
 
সড়কের পাশের এক বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড রহিম জানান, রাতে এখানে ছিনতাইকারীদের আখড়া বসে। মাদকসেবীরাও রাতে এই রাস্তার পাশে বিভিন্ন বাসা ও  অলিগলিতে ঢুকে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করে থাকে। সড়কের অবস্থা খারাপ বলে এখানে পুলিশের গাড়িও টহল দেয়না।
 
সফিক নামে এক ভাড়াটিয়া জানান, আমি আমার পরিবার নিয়ে এখানে আছি দুই বছর। এখানকার মতো খারাপ রাস্তা আমি এই জেলার কোথাও দেখেছি বলে মনে হয় না। এখন সড়কটির কাজ শুরু হয়েছে আশা করছি দ্রুতই আমরা সড়কের এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৭
বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।