ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যশোরে শ্যামা পূজায় মুগ্ধ দর্শক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৭
যশোরে শ্যামা পূজায় মুগ্ধ দর্শক যশোরে শ্যামা পূজা। ছবি: বাংলানিউজ

যশোর: শিল্পির নান্দনিক ছোঁয়ায় দ্যুতি ছড়ালো যশোর শহরের অস্থায়ী মন্দিরগুলো। সৃজনশীলতার অন্য এক প্রকাশ ঘটলো এসব মন্দিরে। সৌন্দর্য পিপাসুদের হৃদয় হলো আবেগে উদ্বেল। শ্যামাপূজার এ উৎসব ভাগাভাগি করতে এবার এভাবেই মনোমুগ্ধকর আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দিনগত রাতে সারাদেশের ন্যায় যশোরে মহা ধুমধামে উদযাপিত হয়েছে শ্যামাপূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শক্তির প্রতীক শ্যামাপূজা করেছেন, পাশাপাশি অবাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় উদযাপন করেছেন দীপাবলি।

দীপাবলি অর্থ আলোর উৎসব। অশুভ-অকল্যাণের প্রতীক দূর করে কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় এই উৎসব পালন করা হয়। সুখ-শান্তি, জ্ঞান ও সম্পদ প্রদানের জন্য এই উৎসবের মাধ্যমে শ্যামার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মূল পূজা সম্পন্ন হলেও প্রতি বছরের ন্যায় যশোরের মন্দিরগুলোতে এবারও আরতি প্রতিযোগিতা, প্রতিযোগিতামূলক খেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতিমা নিরঞ্জনসহ পাঁচদিন ব্যাপী বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে। ফলে আগামী সোমবার পর্যন্ত শ্যামাপূজা উপলক্ষে মহাআনন্দে মেতে থাকবে যশোরবাসী।

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্টযশোর শহরের বেজপাড়া গয়ারাম রোডে শহীদ সুধীর ঘোষ স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে স্থানীয় মাঠে, শ্রীধর পুকুরপাড় পূজা কমিটির আয়োজনে, স্বপন স্মৃতি সংঘের আয়োজনে বেজপাড়া নিউ এক্সটেনশন রোডে, বনানী রোড, গয়ারাম রোড়, টিবি ক্লিনিক পাড়া, বড় বাজার, লোন অফিসপাড়া, বাগমারাপাড়া, সিটি কলেজপাড়া, আশ্রম মোড়, নীলগঞ্জ সাহাপাড়া-তাঁতীপাড়া, বারান্দিপাড়া, মোল্লাপাড়াসহ যশোর জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে প্রতিবারের মতো এ বছরও বেজপাড়া এলাকার অস্থায়ী মন্দিরগুলোতে ব্যতিক্রমী সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। শিল্পীরা মনের মাধুরি মিশিয়ে তৈরি করেছেন শ্যামা প্রতিমা। বিপদহারিণী, অসুর দলনী শ্যামা দেবীর চরণ বন্দনায় সন্ধ্যায় মন্দিরগুলোতে ভিড় করেন ভক্তরা। আর গভীর রাত পর্যন্ত হিন্দু ধর্মালম্বীরাসহ সকল ধর্মীয় লোকজন প্রতিমা ও মন্দির দর্শনে বিভিন্ন মন্দিরে ভিড় জমান।

মন্দিরে দৃষ্টি নন্দন তোরণ ও আলোক সজ্জা দর্শনার্থীদের বিমোহিত করে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে তরুণদের ফুটানো পটকাবাজির মুহুর্মূহু শব্দ মনে জাগায় শিহরণ। পাশাপাশি ঢাক-ঢোল আর সানাইয়ের তালে কোন-কোন মন্দিরে হয়েছে আরতির প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যায় প্রতিমা স্থাপনের পর পুরোহিতরা শ্যামা পূজা আরম্ভ করেন। রাত ১২টার দিকে ভক্তরা অঞ্জলি প্রদান করেন। পূজা শেষে প্রতিটি মন্দিরে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সন্ধ্যায় দীপাবলি অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের আত্মার শান্তি কামনা করেন। স্বামী-সন্তান ও স্বজনরা যাতে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে পারে সেই কল্যাণ কামনা করেন। তবে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নীলগঞ্জ মহাশ্মশানে মঙ্গল প্রদীপ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বল করে মনোবাসনা পূরণের জন্য আরাধনা করেন ভক্তরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।