ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিতে সহযোগিতা করবে আইওএম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
 রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিতে সহযোগিতা করবে আইওএম বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিং। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দেশটির রোহিঙ্গা নাগরিকদের কতুপালংয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে সরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আইওএম’র মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, কতুপালং অস্থায়ী ক্যাম্প।

ভাসানচরে কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে ক্যাম্প সরিয়ে নিতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে আইওএম।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আইওএম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ সৃষ্টিতে সহযোগিতা করবে বলেও জানান ত্রাণমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য তাবু নির্মাণসহ আইওএম’র অন্য সহযোগিতার কথা তুলে ধরে মায়া বলেন, ‘আমাদের এখানে অস্থায়ীভাবে ১ লাখ ৫০ হাজার ঘর দরকার। এর মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার ঘর (তাবু) হয়ে গেছে, যার ৪৬ হাজার ঘর তৈরি করে দিয়েছে আইওএম। বাকিগুলো ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করা হয়েছে’।

রোহিঙ্গা সমস্যাকে বড় ধরনের মানবিক সংকট আখ্যা দিয়ে আইওএম’র মহাপরিচালক ল্যাসি সুইং বলেন, ‘আমরা মনে করি এবং এ বিষয়ে একমত হয়েছি যে, এটি খুব বড় মানবিক সংকট। স্রোতের মতো বিপুল সংখ্যক মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসাটা সময়ের সবচেয়ে বড় সংকট’।

‘সাম্প্রতিক সময়ে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরুর পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন’।

উদারতার পরিচয় দিয়ে সীমান্ত খোলা রেখে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া এবং তাদের সহযোগিতা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক ও গভীর কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

আগামী ২৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইওএম সদর দফতরে সংস্থাটির জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক অ্যাম্বাসেডর মার্ক এবং জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি আয়োজিত সভা অনুষ্ঠত হবে।

সভায় আগামী ৫-৬ মাস পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪৩৪ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার প্রস্তাব দেবেন বলে জানান ল্যাসি সুইং।
 
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যে, এখনো রোহিঙ্গারা আসছেন’।
 
মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের পালানো বন্ধ করতে কি করা উচিৎ- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি রাজনৈতিক বিষয়, পারস্পরিক বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর বিষয়। কফি আনানের নেতৃত্বাধীন রাখাইন স্টেট বিষয়ক কমিশনের প্রস্তাব আমাদের জন্য ভালো রোডম্যাপ’।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি’র স্ত্রী আইওএম বাংলাদেশের কর্মকর্তা পেপ্পি সিদ্দিক।
 
সোমবার (১৬ অক্টোবর) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন আইওএম’র মহাপরিচালক। এ সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন তিনি।

সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে নৃশংস অভিযান শুরু করার পর এখন পর্যন্ত ৫ লাখ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৫ হাজারেরও বেশি নিরীহ রোহিঙ্গা।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ অভিযানকে বলছে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করছে। তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে এখন বিশ্ব সম্প্রদায়ের ওপর চাপ বাড়ছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন আইওএম’র প্রধান।

সফর শেষে বুধবার (১৮ অক্টোবর) ফিরে যাবেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
এমইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।