ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আশ্রিতদের অসামাজিক কার্যক্রমে ধ্বংস আনোয়ারা পার্ক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
আশ্রিতদের অসামাজিক কার্যক্রমে ধ্বংস আনোয়ারা পার্ক আশ্রিতদের অসামাজিক কার্যক্রমে ধ্বংস আনোয়ারা পার্ক

ঢাকা: এমনিতেই রাজধানীবাসীর হাঁটাচলা বা বিনোদনের জন্য খুব একটা খালি জায়গা বা পার্ক নেই। অল্প যে কয়েকটি পার্ক আছে তাও নিঃশেষ হচ্ছে অব্যবস্থাপনায়। এ রকমই একটি পার্ক ফার্মগেটের  আনোয়ারা পার্ক।

পার্কটিতে পথচারীদের বিশ্রামের জন্য রয়েছে ৬টি বড় স্টিলের ছাতা। আর এই ৬টি ছাতাই এখন পার্কটি ধ্বংসের অন্যতম মূল কারণ।

এই ৬টি ছাতার মধ্যে ৫টিতে বসবাস করে বাস্তুহারা ৫টি পরিবার। মূলত আশ্রিত এই কথিত পরিবারগুলোর সদস্যদের হাত ধরেই পার্কে চলে যত অসামাজিক কার্যকলাপ। দেহ ব্যবসা থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসাসহ হেন কোনো অসামাজিক কাজ নেই যার সঙ্গে তারা জড়িত নয়।
 
এছাড়া রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া এবং মলমূত্র ত্যাগ করাসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ এই পার্কটিতে সারে আশ্রিত পরিবারগুলোর সদস্যরা। ফলে পার্কে জায়গায় জায়গায় গড়ে উঠছে মলমূত্র ও ময়লা আবর্জনার স্তর।
 
সোমবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর ফার্মগেটের আনোয়ারা পার্ক ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।
 আশ্রিতদের অসামাজিক কার্যক্রমে ধ্বংস আনোয়ারা পার্ক
স্থানীয় জনতা ও পথচারী এবং পার্কে অবস্থিত ভাসমান হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,পার্কে আশ্রিত প্রতিটি পরিবারে ৫-৭ জন করে সদস্য রয়েছে। সব মিলিয়ে সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০-৩৫ জন। তবে কথিত এই পরিবারের সদস্যরা একই পরিবারের কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে। রাতে হলেই বিভিন্ন অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হয় তারা।
 
এদের মধ্যে অনেকে রাত হলেই হয়ে যায় মাদক ব্যবসায়ী কিংবা ছিনতাইকারী। পরিবারগুলোর নারী সদস্যরা হয়ে যায় দেহ ব্যবসায়ী। তাদের অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলে রাতব্যাপী। সকাল হলেই তারা আবার হয়ে যায় বাস্তুহারা! এই সব কার্যক্রম যেন তারা নির্বিঘ্নে চালাতে পারে সেজন্য সন্ধ্যা ৭টার পর পথচারীদের পার্কটি ব্যবহার করতে বাধা দেন তারা।
 
আর তাদের এ সব অসামাজিক কার্যকলাপ চলে পুলিশের নাকের ডগাতেই। স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, পুলিশকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়েই চলে এই সব অসামাজিক কাজ।
 
ফার্মগেটের মনিপুরী পাড়ায় সপরিবারে বসবাস করেন মো. নূর। আনোয়ারা পার্ক নিয়ে তার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি একদিন সন্ধ্যায় অফিস শেষে পার্কটি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে ২-৩ জন লোক আমাকে এসে ঘিরে ধরে বলে পার্কের বাইরে দিয়ে যেতে। আমি তাদের বলি কেন? তখন তারা আমাকে বলে এখনি না গেলে সমস্যা হবে। পরে জানতে পারি ঐ সময় পার্কের ভিতরে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ চলে বলে তারা কাউকে ভেতরে যেতে দেয় না।
 আশ্রিতদের অসামাজিক কার্যক্রমে ধ্বংস আনোয়ারা পার্ক
রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের বাসিন্দা আব্দুল হাই বাংলানিউজকে বলেন, রাতের বেলায় এক শ্রেণির লোকজন এমনভাবে লাইন ধরে পার্কে গাঁজা কিনতে আসে দেখে মনে হবে সিনেমার টিকিটের জন্য দাঁড়িয়েছে। প্রকাশ্যে চলে এই সব কেউ বলার নেই। আর অন্যদিকে দিনের বেলায় ময়লা আবর্জনার গন্ধে পার্কটিতে যাওয়া যায় না।
 
এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে পার্কের ৪ নম্বর ছাতার নিচে আশ্রিত হামিদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কিছুই করি না। আর গাঁজা বিক্রি ও দেহব্যবসা তো রাইত হইলে ঢাকার সব জায়গায় হয়,এই হানে অইলে দুস কি?
 
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মেট্রোরেলের কাজের জন্য এখনোই আনোয়ারা পার্কের উন্নয়ন কাজ করা যাচ্ছে না। মেট্রোরেলের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পার্কটিতে রাখা হবে। কাজ শেষ হয়ে গেলে উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।
 
অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সম্পর্কে তিনি বলেন, পার্কটিতে কোনো ধরনের অসামাজিক বা অবৈধ কর্মকাণ্ড চলে কিনা তা তিনি জানেন না।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
এমএসি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ