ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন্ধন ছুটবে ১৬ নভেম্বর, পাঁচ ঘণ্টায় খুলনা থেকে কলকাতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
বন্ধন ছুটবে ১৬ নভেম্বর, পাঁচ ঘণ্টায় খুলনা থেকে কলকাতা বন্ধন ছুটবে ১৬ নভেম্বর, পাঁচ ঘণ্টায় খুলনা থেকে কলকাতা (ফাইল ফটো)

ঢাকা:  আর মাত্র এক মাস। অনেক অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১৬ নভেম্বর থেকে উভয় বাংলার ভালোবাসা নিয়ে খুলনা-কলকাতা রুটে ছুটতে শুরু করবে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’।

আর এই আন্ত:দেশীয় ট্রেনের যাত্রীদের জন্য বড় একটা সুখবরই আছে। এ রুটে উভয় দেশের প্রান্তিক স্টেশন কলকাতার চিৎপুর আর খুলনাতেই সারা হবে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা।

তাই চেক পোস্টে দীর্ঘ যাত্রা বিরতির বিড়ম্বনা সইতে হবে না বন্ধনের যাত্রীদের। খুলনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত পৌনে দুশ’ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা। সকাল সাড়ে সাতটায় কলকাতার চিৎপুর থেকে যাত্রী নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় বন্ধন পৌঁছুবে খুলনায়। এরপর দুপুর দেড়টায় খুলনা থেকে যাত্রী নিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ ফের কলকাতায় পৌছে যাবে।

প্রাথমিক প্রস্তাবে চেয়ার  কোচে আট ডলার (বাংলাদেশি  মুদ্রায়  সাড়ে আটশ’ টাকা) এবং কেবিনে ১২ ডলার (সাড়ে নয়শ’ টাকা) সিট ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে বন্ধনে।

সোমবার ( ১৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর রেলভবনে  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ রেলওয়ের  একজন  উর্দ্ধতন কর্মকর্তা  বাংলানিউজকে জানিয়েছেন,  চলতি অক্টোবরের ২৪ ও ২৫ তারিখ দিল্লিতে উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের রেল কর্মকর্তাদের বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

ওই বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল নতুন দিল্লি যাবেন। ভারতের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বসে ভাড়া চূড়ান্ত করবেন তারা।

এর আগে ভাড়া নির্ধারণে উভয় দেশের কর্মকর্তা সমন্বয়ে যৌথ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট  পেশ  করতে বলা হয়। নয়াদিল্লি রেলভবনে  গত ১৩  থেকে  ১৫  সেপ্টেম্বর তিন দিন ব্যাপী  ভারত-বাংলাদেশের  রেল কর্মকর্তাদের  বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে তিন দফায় দিনক্ষণ নির্ধারণ করেও খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী রেল চলাচল শুরু করা যায়নি। প্রথম দফায় গত পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) এ ট্রেন চালুর কথা ছিলো। কিন্তু ওই তারিখে ট্রেন চালু করা সম্ভব হয়নি। এরপর দ্বিতীয় দফায় পহেলা জুলাই ও তৃতীয় দফায় তেসরা আগস্ট ট্রেনটি চালুর উদ্যোগ নিলেও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি।

ঢাকা-কলকাতার পর খুলনা-কলকাতা রুটে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় মৈত্রী  ট্রেনটির  নামকরণের  প্রস্তাব  করা হয়েছিল ‘সোনারতরী’। কিন্তু উভয় দেশের রেলে একই নাম ব্যবহৃত  হওয়ায়  তা বাদ দেওয়া হয়। এরপর  প্রস্তাব  দেওয়া হয় ‘সম্প্রীতি’ ও ‘বন্ধন’। পরে বন্ধন নামটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।     
 
অনেক আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পর শেষ পর্যন্ত বন্ধন লাইনে গড়াচ্ছে।

খুলনা-কলকাতা রেল চলাচল নিয়ে গত  ৫২ বছর ধরে আশায় বিভোর ছিলেন এ দুই বাংলার মানুষ। ব্রিটিশ শাসনামলে চালু হওয়া পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে খুলনা কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত। বরিশাল থেকেই যাত্রীরা স্টিমার  ও রেলের টিকিট এক সঙ্গে কেটে  খুলনায় স্টিমার থেকে নেমে ট্রেনে উঠতেন।

নামতেন গিয়ে একেবারে শিয়ালদহ স্টেশনে। ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সারা হতো রেলের  কামরার মধ্যেই। সীমান্তে কোন বাড়তি  ঝামেলা  পোহাতে হতো না। এছাড়া ট্রেন চলাচল করতো ফরিদপুরের গোয়ালন্দ-কলকাতা রুটেও। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় সব রেল চলাচল।

অবশ্য দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৮ সালের পহেলা বৈশাখ(১৪ এপ্রিল) থেকে ঢাকা-কলকাতা  রুটে  মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু করা হয়। যা এখন আশাতীত লাভের মুখ দেখাচ্ছে উভয় দেশের রেলে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
এসএস/জেডএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad