ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাদা কাগজে লেখা হচ্ছে ইপিআই টিকাদানের সেশন প্ল্যান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
সাদা কাগজে লেখা হচ্ছে ইপিআই টিকাদানের সেশন প্ল্যান সাদা কাগজে লেখা হচ্ছে ইপিআই টিকাদানের সেশন প্ল্যান

বরিশাল: টিকাদান কার্ডের অভাবে বরিশালে মাসের পর মাস ধরে ব্যাহত হচ্ছে শিশুদের স্বাভাবিক ইপিআই টিকাদান কর্মসূচি।

হলুদ রংয়ের ওই কার্ডের অভাবে মাঠ পর্যায়ের ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে এখন সাদা কাগজে হাতে লিখে দেয়া হচ্ছে শিশুর টিকার সেশন প্ল্যান।

অনেক জায়গায় আবার সাদা কাগজে কার্ডের ফটোকপি দিয়েও কোনভাবে কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।

তবে আগামী ২ মাসের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন অফিস অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইপিআই টিকাদান কার্ড (শিশু) মূলত যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোক্কালজনিত নিউমোনিয়া ও রুবেলা রোগের টিকা প্রদানের সেশন প্ল্যানের কাজে ব্যবহৃত হয়। যাকে টিকার ক্যালেন্ডারও বলা চলে।

৪২ দিন পূর্ণ হওয়া শিশুকে প্রথম টিকা প্রদানের দিন থেকে এ কার্ডটি নবজাতক শিশুর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি কার্ডটি শিশুকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময়, বিদেশ গমনের সময়, টিডি টিকা দেয়ার সময় আর বর্তমান সময়ে জন্ম নিবন্ধনের কাজেও লাগে। যা কার্ডের গায়েও ছাপার অক্ষরে লিপিবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বরিশালে এই কার্ড নেই বললেই চলে।  

জেলা ইপিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট বজলুর রহমান জানান, বরিশাল জেলার ১০ উপজেলার জন্য বছরে ৯০ হাজার কার্ডের চাহিদাপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তার অনুকূলে ১২ হাজার কার্ড তারা পেয়েছেন। ২/৩ মাস পূর্বে একবার কিছু কার্ড এসেছিলো তা দিয়ে  উপজেলাগুলোতে সামান্য কিছু কার্ড পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইপিআই কেন্দ্রের সেবিকা নাছিমা বেগম জানান, শুধু তাদের কেন্দ্রেই মাসে ১৬০ থেকে ১৭০ টি নতুন টিকাদান কার্ডের প্রয়োজন হয়।   গত ৩ মাস ধরে কার্ডের সংকট ব্যাপক আকার ধারন করেছে। মাঝখানে কিছু কার্ড পেয়েছিলেন তাও অল্প কয়েক দিনে শেষ হয়ে যায়। এরপর কার্ডের ফটোকপি দিয়েও টিকাদান কর্মসূচি চালিয়েছেন। বর্তমানে তাও না থাকায় এখন সাদা কাগজে লিখে দিচ্ছেন।

যা নিয়ে প্রায়ই পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। সাদা কাগজে লিখে দেয়া বা ফটোকপিতে লিখে দেয়ার বিষয়টি কিছু অভিভাবক কোন ভাবেই মানতে পারেন না। তারা বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ইপিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট কবির হোসেন বলেন, প্রায় তিন মাস ধরে কোন ইপিআই টিকাদান কার্ড (শিশু) আমাদের কাছে নেই। আমরা চাহিদাপত্র সিভিল সার্জন অফিসকে প্রতি মাসেই দিয়ে আসছি কিন্তু তাদের কাছেও নাকি এ কার্ড নেই। গত বছর কার্ড সংকট থাকায় প্রায় ৭ হাজার কার্ড কর্পোরেশনের নিজ তহবিল থেকে ছাপিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু এবার তাও সম্ভব হয়নি।

কার্ড না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা অভিভাবক সুমাইয়া আক্তার জানান, শেবাচিম হাসপাতালে সন্তানকে টিকা দেয়ার সময় সাদা কাগজে পরবর্তী তারিখের কথা লিখে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু দায়িত্বরতদের কাছে হলুদ কার্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে সরবরাহ নেই বলে জানান। অথচ এই কার্ড ছাড়া বাচ্চার জন্মনিবন্ধনই করা যাবে না।

তবে বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, এখন ফটোকপি বা সাদা কাগজে টিকাদান কার্ডের কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কার্ড আসলে সেগুলো ঠিক করে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, তারা কার্ড ছাপতে দিয়েছেন। আগামী ২/১ মাসের মধ্যে কার্ডের  এ ঝামেলা আর থাকবে না।

বাংলাদেশ সময় : ১৭৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
এমএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।