ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দু’মুঠো ভাতের জন্য হাসপাতালে ফুলবানু!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৭
দু’মুঠো ভাতের জন্য হাসপাতালে ফুলবানু! হাসপাতালের মেঝেতে ফুলবানু, ছবি: বাংলানিউজ

নেত্রকোনা: শরীরের ভাঁজ পড়ে যাওয়া চামড়া অসহায় বৃদ্ধা ফুলবানু’র বয়স সম্পর্কে জানান দিচ্ছে। তার বয়স কোনোভাবেই ৮০ বছরের কম হবে না। বয়সের ভারেই বাঁকা হতে হতে আজ তিনি ঠিক যেন একটি ফাঁকা চাকা হয়ে গেছেন।

জীবনের যে সময়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে হেসে খেলে সময় পার করার কথা অথচ সেসময়ে তিনি দু’মুঠো ভাতের জন্যে অনাদর আর অবহেলায় দিনরাত নেত্রকোনার আধুনিক সদর হাসপাতাল বারান্দায় পড়ে থাকেন!হাসপাতালের মেঝেতে ফুলবানু, ছবি: বাংলানিউজফুলবানুর সঙ্গে কথা বললে বাংলানিউজকে তিনি জানান, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের রাঙ্গিসপুর গ্রামে তার বাড়ি। দীর্ঘদিন আগেই মারা গেছেন স্বামী কৃষক আলফজ আলী।

ফুলবানুর ২ ছেলে ছেলে। তারা ঢাকার পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বিয়ে-শাদি করেছেন, বউয়েরা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। ছেলেরা জন্মদাত্রী মা’কে ভালোবেসে মাঝে-মধ্যে খোঁজ-খবর নিলেও ছেলে বউরা এমুখো হন না খুব একটা, শাশুড়ির দেখভালে তাদের বড্ড অনিহা!

এমন বাস্তবতায় ক্ষুধার যন্ত্রণায় খুব কষ্ট করেন ফুলবানু। জীবনের দীর্ঘসময় অন্যের বাসাবাড়িতে ও নেত্রকোনা পুলিশ লাইনসে কাজ করে ছেলেদের লালন-পালন করেছেন, তাদের মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন। কিন্তু জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তিনি নিজেই দু’মুঠো ভাতের জন্য হাসপাতাল বারান্দায় ঠাঁই নিয়েছেন!

বৃদ্ধাশ্রমে যাবেন কি-না জানতে চাইলে ফুলবানুর সম্মতি মেলেনি। কারণ সেখানে গেলে তো আর কোনোদিন তিনি নিজের ছেলেদের দেখতে পাবেন না! তাই তিনি ভালো পোশাক ও খাবার পেলেও বৃদ্ধাশ্রমে যাবেন না।

বুধবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে হাসপাতালে অবস্থান করছেন তিনি। কিন্তু হাসপাতালেই তাকে খাবারের নিশ্চয়তা কে দেবে? এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে একবার ভাত মিললে শুক্রবার কেটেছে তার অনাহারে। এভাবেই চলছে ফুলবানুর জীবন। যে অনিশ্চিত জীবনের নেই কোনো নিশ্চয়তা।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৭
এএটি/এমএইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।