বেওয়ারিশ মরদেহ দাফনকারী সেবামূলক, অমুনাফাভোগী ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম জানিয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ দাফনের নির্ধারিত কবরস্থান গুলোতে (জুরাইন, রায়েরবাজার) পর্যাপ্ত বাঁশ-চাটাই ও নির্ধারিত জায়গা খালি না থাকার মরদেহ নিতে পারছে না। এ কারণে ঢামেক মর্গে পড়ে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় ১৩ মরদেহের দাফন হচ্ছে না।
আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা মরদেহগুলো দাফনের জন্য নিতে প্রস্তুত আছে, কিন্তু মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার কবরস্থান কর্তৃপক্ষ জানায়, দাফনের জন্য বাঁশ ও চাটাই নাই।
এদিকে ঢামেক মর্গে পড়ে থাকা মরদেহগুলোতে পচে-গলে পোকা ধরায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে করে মেডিকেলে সেবা নিতে আসা রোগীরাও বেশ অসুবিধায় পড়েছেন।
ঢামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, সড়ক দুর্ঘটনা, ট্রেনের ধাক্কাসহ বিভিন্ন কারণে রাজধানী এবং এর আশপাশের এলাকা থেকে আসা এসব মরদেহ সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ মর্গে পাঠিয়েছে। এদের মধ্যে নারীসহ মোট ১৩টি মরদেহস রয়েছে। মরদেহ গুলো ময়নাতদন্ত শেষে শনাক্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে বেশ কয়েক দিন হলো। কিন্তু এখনো নামপরিচয় মেলেনি।
মরদেহ গুলোর মধ্যে সাভারে আশুলিয়া থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারী (২৭), উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষ (৩৮), খিলগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষ (৫০) ও বানানীর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষ (৪৮) সহ মোট ১৩টি ঢামেক মর্গের ফ্লোরে রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, মরদেহ গুলোর পরিচয় না পাওয়া পুলিশের অনুমতি নিয়ে দাফনের জন্য আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামকে কয়েকদিন আগেই জানানো হয়েছে। তারা কবর স্থানের কর্মচারীদের বরাত দিয়ে মর্গ কর্তৃপক্ষকে জানায়, বাঁশ ও চাটাই না থাকার কারণে অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ দাফন কারার জন্য নিতে পারছে না।
এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয় জুরাইন কবর স্থানের সিনিয়র মহরার মো. সোয়াইবের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, জুরাইন কবর স্থানে আঞ্জুমানের জন্য নির্ধারিত জায়গা খালি নাই। তা ছাড়া উত্তর সিটি করপোরেশন রায়ের বাজার কবর স্থানে ৯৬ একর জায়গার মধ্যে ১০ একর জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের দাফনের জন্য।
রায়ের বাজার কবরস্থানের সিনিয়র মহরার ও ইনচার্জ আবদুর আজিজ বাংলানিউজকে জানান, অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ দাফনের জন্য উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে বাঁশ ও চাটাইয়ের ব্যবস্থা না থাকায় দাফন হচ্ছে না। পরিচিত মরদেহ গুলোর দাফন হচ্ছে স্বজনদের কিনে দেওয়া বাঁশ-চাটাইয়ে।
তিনি জানান, রায়ের বাজার কবর স্থানটি উত্তর সিটি করপোরেশনের আন্ডারে। তারা বাঁশ ও চাটাইয়ের বিষয়টি অফিসকে জানিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৭
এজেডএস/এসএইচ