খুলনায় এই রেস্টুরেন্টটিই প্রথম কালাভুনার আইটেম নিয়ে আসায় ভোজন রসিকরা প্রতিদিনই ভিড় করছেন এখানে।
বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কালাভুনা খেতে আসা মুন্নি বেগম বলেন, কালাভুনা চট্টগ্রামের বিখ্যাত খাবার।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কালাভুনার স্বাদ, ঘ্রাণ ও মজা সম্পূর্ণ আলাদা। যে কারণে কয়েকজন সহকর্মী মিলে কালাভুনা দিয়ে দুপুরের খাবার খেতে এসেছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, এ রেস্টুরেন্টের খাবারের স্বাদই আলাদা। বিশেষ করে কালাভুনা একবার খেলে বার বার খেতেই ইচ্ছে করে। না খেলে বোঝা যাবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আধুনিকতার ছাপ রেস্টুরেন্টটিতে। ঘরোয়া পরিবেশে এ রেস্টুরেন্টের ভিতরে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। ১২ জন কর্মচারী খাবার রান্না ও পরিবেশনের কাজে ব্যস্ত রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এখানে খাবারের স্বাদ নিতে আসছেন। অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে কালাভুনার কথা শুনে খেতে এসেছেন।
রেস্টুরেন্টির মালিক মো. সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, জিরোপয়েন্টে অনেক রেস্টুরেন্ট আছে। কিন্তু মানসম্মত ভালো পরিবেশে খাওয়ার মতো রেস্টুরেন্টের অভাব রয়েছে। আমি ও এক বাল্য বন্ধু শাহনাজ খান বাপ্পি মিলে খুলনার মানুষকে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি কালাভুনাসহ বিভিন্ন খাবারের স্বাদ দিতে চলতি বছরের ১৪ জুলাই চিটাগাং দরবারের যাত্রা শুরু করি। যাত্রার কিছু দিনের মধ্যে ভোজন বিলাসীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে রেস্টুরেন্টটি। দুই বন্ধু এক সাথে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে কোন চাকরির খোঁজ না করে এ ব্যবসা শুরু করেছি। তিনি আরও বলেন, খুলনার বিখ্যাত খাবার হচ্ছে চুই ঝালের মাংস। যেটি এখানকার যে কোন হোটেলে পাওয়া যায়। তাই চিন্তা করলাম খুলনার মানুষকে ভিন্ন কিছুর স্বাদ দিতে। সেই চিন্তা থেকে চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবানি খাবারের রেস্টুরেন্ট চালু করি। চালুর পর যা আশা করেছিলাম তার থেকে বেশি সাড়া পাচ্ছি।
রেস্টুরেন্টটির অপর মালিক শাহনাজ খান বাপ্পি বাংলানিউজকে বলেন, কর্পোরেট লেভেলের লোকজন আমাদের এখানে বেশি আসেন। আজকেও ২৫-৩০ জন ব্যাংকার আমাদের রেস্টুরেন্টে দুপুরে খেয়েছেন। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে দল ধরে অনেকেই আসেন খেতে। খুলনার নামী দামী হোটেল-রেস্টুরেন্টের মালিকরাও পরিবার নিয়ে মেজবানি কালাভুনা ও আমাদের এখানকার স্পেশাল কাবাব খেতে আসেন।
পার্সেলসহ যে কোন অনুষ্ঠানে এখান থেকে খাবার সরবরাহ করা হয় বলে জানান তিনি। রেস্টুরেন্টটির ম্যানেজার মাসুম বিল্লাহ জানান, মেজবানি কালাভুনা প্রতি ফুল বাটি ৯৩০ টাকা। যা ৫-৬ জনে খেতে পারবেন। প্রতি হাফ বাটি ৪৬৫ টাকা (তিন জনের), প্রতি বাটি সিঙ্গেল ১৫৫ টাকা (১ জনের)। মেজবানি গরুর মাংস প্রতি ফুল বাটি ৮৪০ টাকা। যা ৫-৬ জনে খেতে পারবেন। প্রতি হাফ বাটি ৪২০ টাকা (তিন জনের), প্রতি বাটি সিঙ্গেল ১৪০ টাকা (১ জনের)। খাসির মেজবানি কালাভুনা প্রতি ফুল বাটি ১২০০ টাকা। যা ৫-৬ জনে খেতে পারবেন। প্রতি হাফ বাটি ৬০০ টাকা (তিন জনের), প্রতি বাটি সিঙ্গেল ২০০ টাকা (১ জনের)। মেজবানি খাসির মাংস প্রতি ফুল বাটি ১২০০ টাকা। যা ৫-৬ জনে খেতে পারবেন। প্রতি হাফ বাটি ৬০০ টাকা (তিন জনের), প্রতি বাটি সিঙ্গেল ২০০ টাকা (১ জনের)। এছাড়া মেজবানি ডাল মাংস, মুরগি, কাবাব, নান, পরোটা, মাছ, ফেস জুসসহ অন্যান্য খাবার পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়:০৬১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭
এমআরএম/আরআই