ঢাকার রাস্তায় চলার অনুমোদন নেই ব্যাটারিচালিত এসব স্কুটারের। আর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) অনুমোদন ছাড়াই যখন রাস্তায় স্কুটার নিয়ে নামছেন বাইকাররা তখন পুলিশ সেটি ধরে সোজা পাঠিয়ে দিচ্ছে ডাম্পিংয়ে।
রাজধানীতে যেসব স্কুটার চলতে দেখা যায় এগুলোর গতি ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে। কোনো কোনোটির গতি তারচেয়ে বেশি। তবে ৭০ কিলোমিটারের বেশি নয়।
সাজিদ হোসেনের বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের মধ্যে। এ কারণে সকাল-বিকেল যাওয়া-আসার জন্য স্কুটার কিনলেও সেটি খুইয়েছেন। রাজধানীর একটি ট্রাফিক পুলিশ পয়েন্টে জব্দ করে ডাম্পিংয়ে দিয়েছে পুলিশ।
পরে থানার ওই ডাম্পিংয়ে গিয়ে সাজিদ দেখেছেন আরও অন্তত পাঁচ থেকে ছয়টি স্কুটার ডাম্পিংয়ে রাখা। সাজিদ কিনেছিলেন ৫২ হাজার টাকা দিয়ে। যেহেতু বিক্রি হচ্ছে তাই চলতে বাধা হবে না ভেবেই তার কেনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুরান ঢাকার বংশালের কাজী আলাউদ্দিন রোডের ‘গ্রিন টাইগার’ নামে একটি দোকান থেকে বেশিরভাগ স্কুটার বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বেশি দামি স্কুটারও মিলছে তেজগাঁও লিংক রোডের মোটরসাইকেলের শো-রুমগুলোতে। এগুলো চীন থেকে আনা।
গ্রিন টাইগার-এর একজন বিক্রেতা রনি আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, তারা এগুলো নিয়মিত বিক্রি করছেন। অনেকেই কিনছেন। এখন বিআরটিএ এটার অনুমোদন দেয় না সত্য, কিন্তু দেশে এগুলো নিয়ে এসে বিক্রিতে কোনো বাধা নেই তাদের।
ব্যাটারিচালিত স্কুটার আমদানিতে বিধি-নিষেধ না থাকায় হরহামেশা বিক্রিও করছেন তারা- জানালেন তেজগাঁওয়ের আরেকজন বিক্রেতা।
আকেরজন স্কুটার বাইকার জানান, তিনি স্কুটার চালিয়েই অফিসে যান। তবে বিজয় সরণি, আগারগাঁও, মিরপুর এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের চোখ এড়িয়ে চালাতে হয়। কারণ তারা পেলেই এটা ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের (পশ্চিম) সিনিয়র সহকারী কমিশনার শফিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাটারিচালিত স্কুটির কোনো অনুমোদন দেয়নি বিআরটিএ। এ কারণে এদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। ফলে এটা পাওয়া মাত্রই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।
কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এগুলো ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে দেই।
এসব স্কুটার বিক্রি কারা করছে আর কারা কিনছে এটা দেখার বিষয় নয় বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
ট্রাফিক পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার ফাতেমা ইসলাম জানান, ব্যাটারিচালিত বাইক খুব বেশি একটা দেখা যায় না। তবে পেলেই ডাম্পিংয়ে দেন তারা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এগুলোর গতি কম এবং দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হতে পারে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিআরটিএ থেকে কোনো ইলেকট্রিক বাইকের অনুমোদন দেন না তারা।
অনুমোদন না দিলেও আমদানি বন্ধ নেই। এ সুযোগে রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ব্যাটারিচালিত স্কুটার। কিন্তু পুলিশ দেখা মাত্রই এগুলো ধরে নিচ্ছে। আর ভোগান্তিতে পড়ছেন যারা এগুলো কিনছেন। এ নিয়ে নীতিমালা প্রয়োজন বলে মনে করেন ব্যাটারিচালিত স্কুটার বাইকররা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৭
এসএ/এএ