ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ হকের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ হকের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার সব্যসাচী লেখক সৈয়দ হকের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার

কুড়িগ্রাম: দেশবরেণ্য সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর)। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ৮২ বছর বয়সে ইহলোক ছেড়ে পরলোক গমন করেন তিনি।

জীবদ্দশায় তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী কবির নিজ জন্ম শহর কুড়িগ্রামের সরকারি কলেজ চত্বরের প্রধান ফটকের পাশে গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
 
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সৈয়দ হকের প্রথম মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসন, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।


 
সৈয়দ হককে স্মরণ করতে গৃহিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- কবির সমাধিতে পুস্পমাল্য অর্পণ, দোয়া মাহফিল, শোক র‌্যালি, মানববন্ধন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি।

তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজে ধীরগতির কারণে কবির কবরটি এখনো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। খুব দ্রুত কলেজ চত্বরে কবির সমাধী ঘিরে স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ করে সব সাহিত্য কর্ম সংরক্ষণ সহ তার নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি কুড়িগ্রামবাসীর।

সম্প্রতি কবির সমাধিস্থল পরিদর্শন করে কবরকে ঘিরে এক একর জমির উপর সৈয়দ শামসুল হক স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানান সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। গুনী এ লেখকের সব সৃষ্টি তরুণ প্রজন্মসহ সব মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সমাধিকে ঘিরে দ্রুত স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ করবে সরকার, এমনটাই প্রত্যাশা তার জন্মশহর কুড়িগ্রামের মানুষের।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ মির্জা নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, কবির সমাধিকে ঘিরে স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মিত হলে বহুমাত্রিক এ লেখককের সাহিত্য কর্ম চিন্তা সমৃদ্ধ করবে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীসহ দেশের সব সাহিত্য অনুরাগীদের।
 
কুড়িগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বাংলানিউজকে জানান, মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার এ মানুষটি বিভিন্ন মাধ্যমে অনর্গল লিখে গেছেন। তার লেখা অসংখ্য কবিতা, উপন্যাস আর নাটকের মধ্যদিয়ে তিনি কুড়িগ্রামকে তুলে ধরেছেন বিশ্ব সাহিত্যে। তার অকাল প্রয়াণে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বাংলা সাহিত্যে, যা কোনদিন পূরণ হবার নয়।
 
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বাংলানিউজকে জানান, সব্যসাচী লেখকের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিলাদ মাহফিল, শোক র‌্যালি এবং তার আত্মজীবনী নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের নকশা প্রায় চূড়ান্ত হবার পথ, এটি হয়ে গেলেই দ্রুত তা বাস্তায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম শহরের থানা পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। হোমিও চিকিৎসক সৈয়দ সিদ্দিক হোসেন ও মা  নুর জাহানের ৫ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ধরলা নদীর পাড়ে শৈশব কাটানো এ কবি শহরের রিভার ভিউ হাই স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার পর পাড়ি জমান ঢাকায়। সেখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি মনোযোগী হন লেখালেখিতে। একে একে তার পদচারণা হতে থাকে গল্প, কবিতা, গান ও নাটকসহ সাহিত্যের সব অঙ্গনে। তার লেখায় ফুটে ওঠে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনসহ সাধারণ মানুষের কথা। রচনা করেন নাটক নুরুলদীনের সারাজীবন, পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়সহ হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুসের মত জনপ্রিয় গান। গুণী এ লেখক তার সাহিত্য কর্মের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবেন মানুষের মাঝে। এখন অপেক্ষা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তার স্মৃতি ধরে রাখা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
এফইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।