ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিখ্যাত বেলুড় মঠ আদলে খামারবাড়ির পূজামণ্ডপ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
বিখ্যাত বেলুড় মঠ আদলে খামারবাড়ির পূজামণ্ডপ বিখ্যাত বেলুড় মঠ আদলে খামারবাড়ির পূজামণ্ডপ, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ভারতের বিখ্যাত বেলুড় মঠের আদলে সর্বধর্মের স্থাপত্যের নিদর্শন রেখে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। যাদের বেলুড় মঠ দর্শনের সুযোগ হয়নি, তারা বেলুড় মঠের আদলে নির্মিত এ পূজামণ্ডপে পূজা অর্চনা করে আনন্দ পাবেন বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।

সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের (সসকস) উদ্যোগে খামার বাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন চত্বরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর ) ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

এখন চলছে মণ্ডপ সাজানোর শেষ প্রস্তুতি।

হিন্দু ধর্মের মহাপুরুষ রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দের উদ্যোগে উনবিংশ শতাব্দির শেষের দিকে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের হাওড়ায় নির্মাণ করা হয় বিখ্যাত বেলুড় মঠ। যা রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান কার্যালয় হিসেবে পরিচিত।

সরেজমিনে পূজা মণ্ডপটি ঘুরে দেখা যায়, মূল মণ্ডপ নির্মাণ, প্রতিমা অলংকরণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আলোকসজ্জা শেষের পর্যায়ে। এখন চলছে শুধু শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। ‘স্থাপত্যের ঐকতান’ মঠের আদলে পৃথিবীর প্রধান চার ধর্ম  ইসলাম, খিস্ট্রান, হিন্দু ও বৌদ্ধ স্থাপত্যের মিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপটি। বিখ্যাত বেলুড় মঠ আদলে খামারবাড়ির পূজামণ্ডপ, ছবি: বাংলানিউজমণ্ডপের মূল প্রবেশপথ বৌদ্ধ ধর্মীয় আদর্শে, উপরের স্তম্ভ দক্ষিণ ভারতীয় মন্দিরের আদর্শে, জানালা উত্তর ভারতের রাজপুত ও ইসলামি মুঘল স্থাপত্যের আদর্শে ও কেন্দ্রীয় গম্বুজটি ইউরোপীয় রেনেসাঁ স্থাপত্যে নির্মিত হয়েছে। মণ্ডপজুরে রয়েছে খ্রিস্টান স্থাপত্যেরও নিদর্শন।

সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বাংলানিউজকে বলেন,‘ বেলুড় মঠের নান্দনিক দৃশ্য ও আরাধনা করার নিরব পরিবেশ বেলুড় মঠের আদলে পূজামণ্ডপ করতে আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তাছাড়া সকল ধর্মের স্থাপত্য নিদর্শনে নির্মিত বেলুড় মঠের আদলে আমাদের এ পূজামণ্ডপ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের সম্পৃতির যে বন্ধন তারই নির্দশন স্বরুপ বলে আমি মনে করি’।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি শাখা নিয়মিত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে মণ্ডপের ভেতর ও সামনের রাস্তা মিলিয়ে ২৫টি সিসি টিভি ক্যামেরা ও প্রধান ফটকে দু’টি আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর স্থাপন করা হবে। সার্বিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ৬৫ জনের একটি ভলান্টিয়ার দল থাকবে যাদের মাঝে ওয়াকিটটি সরবরাহ করার ভাবনা আমাদের রয়েছে। ’

মূল মণ্ডপের ভেতর সুউচ্চ বেদিতে স্থাপিত প্রতিমা করা হয়েছে সোনার বর্ণে। চিরাচরিতভাবে মণ্ডপগুলোতে লক্ষ্মী ও সরস্বতী দেবীর সঙ্গে একটি করে বাহন থাকলেও এখানে লক্ষ্মীর সঙ্গে পেচা আর সরস্বতীর সঙ্গে হাঁস রাখা হয়েছে ছয়টি করে। বৈচিত্র্য আনা হয়েছে অন্যান্য প্রতিমা তৈরিতেও। দর্শনার্থী ও ভক্তদের মাঝে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতেই ব্যতিক্রমী এ আয়োজন বলে জানান প্রতিমাশিল্পী ও মণ্ডপের প্রধান কারিগর উত্তম কুমার রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এএটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।