বাণিজ্য সংশিষ্টরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, এটি দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর ও সবচেয়ে বেশি রাজস্ব দাতা হলেও এখানে কর্তৃপক্ষের নজর কম। দীর্ঘদিন ধরে এ হাল থাকলেও অদক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগে চলমান অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন আসছে না।
আর বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, চলমান সমস্যা উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে কিছু উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায় ক্রমে অনান্য কাজ সমাপ্ত হলে তখন এ অভিযোগ থাকবে না।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বেনাপোল বন্দর অভ্যন্তরে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি না হলেও আগের জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ পণ্যাগারের সামনে হাঁটু পানি-কাদা জমে রয়েছে। পায়ের জুতা খুলে প্যান্ট-লুঙ্গি গুটিয়ে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা পণ্য খালাসের কাজ করছেন। অপরিকল্পিতভাবে বন্দর উন্নয়নে রাস্তার উপর জমে থাকা পানি গড়িয়ে পণ্যাগারে প্রবেশ করছে। কেমিক্যাল মিশ্রিত কাদা-পানিতে কাজ করতে গিয়ে অনেকে রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আমদানিকারক জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কোন ভদ্র মানুষের বন্দরে প্রবেশের পরিবেশ নেই। গত প্রায় এক যুগ ধরে এই দুর্ভোগ তাদের ভোগ করতে হচ্ছে। অবস্থা পরিবর্তনে বন্দর সফরে আসা মন্ত্রী, এমপিরা কথা দিচ্ছেন। কিন্তু উন্নয়ন কাজের গতি নেই বললেই চলে।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী নেতা আমিনুল হক বলেন, দীর্ঘ বিরতি দিয়ে মাঝে মধ্যে বন্দরে কিছুটা উন্নয়ন কাজ হলেও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় অল্প সময়েই তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে ওঠে। টেকসই উন্নয়ন হলে দুর্ভোগ ভোগ করতে হয় না।
পণ্যবাহী ট্রাক চালক আব্বাস জানান, আমদানি পণ্য লোড, আনলোডের জন্য তিনি দেশের অনেক বন্দরে গেছেন। কিন্তু বেনাপোল বন্দরের মতো এতো বেহাল চিত্র কোথাও তার চোখে পড়েনি। এখানে বন্দরে জমে থাকা কাদা ও গর্তে প্রায়ই ট্রাক আটকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পণ্য পরিবহনে বিলম্ব হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তিনি কিছুদিন হলো এখানে যোগদান করেছেন। ইতিমধ্যে বন্দরে চলমান সব সমস্যা নির্ণয় করে তিনি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। অনেক কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। সবার সহযোগিতায় অল্প কিছু দিনের মধ্যে এ বন্দরকে আধুনিক বন্দরে রুপান্তরিত করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বন্দর শ্রমিকদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে কাদা-পানিতে পণ্য খালাস করতে গিয়ে এসিডের ড্রাম ফেটে তাদের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তাদের ভাগ্য উন্নয়নে এ পর্যন্ত কেউ কথা রাখেনি। ফলে দুর্ভোগের মধ্যেই তাদের কাজ করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময় : ১০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এজেডএইচ/জেডএম