ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১৪ বারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
১৪ বারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর ১৪ বারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে মিয়ানমার বাহিনির চলমান নিধনযজ্ঞ ও বর্বরতা থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষা এবং বাংলাদেশে পালিয়ে আসাদের সেদেশে ফেরত নিতে জাতিসংঘে ৫ দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন। 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ পর্যন্ত ১৪ বারের মতো সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশিদের এবং বিশ্ববাসীর দৃষ্টিতে জাতিসংঘে এটাই তার দেওয়া সবচে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

 

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশ আর কখনোই এতো বড় সংকটের মুখোমুখি হয়নি। তারপরও শান্ত সমাহিত চিত্তে তিনি উদার আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিপূর্ণভাবে এ সমস্যার সমাধানের জন্য।

শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যাটির ন্যায়সঙ্গত সমাধানের জন্য জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমর্থন আদায় করেছেন। সফল ও জোরালো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। জাতিসংঘে দেওয়া তার ভাষণটি তার নেতৃত্বের যোগ্যতা ও উচ্চতাকেই তুলে ধরেছে।   
 
সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী শনিবার(২৩ সেপ্টেম্বর) বাংলানিউজের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে একান্তে কথা বলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণকে এভাবেই মূল্যায়ন করেন তিনি।  

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘসহ বিশ্বনেতাদের কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা ছাড়াও জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণের কথা বলেছেন। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা, রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বলেছেন।

আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জোর আহ্বান করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃ্ত্বে একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল এসে যেন বাংলাদেশের সমস্যাটা সরেজমিনে এসে দেখে যান। তিনি অনতিবিলম্বে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রর্ত্যাবাসনের দাবিও তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত হবে, তা হচ্ছে তিনি একটি বারের জন্যও বলেননি রোহিঙ্গাদের জোর করে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখানে তিনি নিজের মানবিক উচ্চতা যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনি জাতি হিসাবেও আমাদের উচ্চতাকে তুলে ধরেছেন।

সাবেক এই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া মানে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া। একটি গণতান্ত্রিক দেশে নানা রকম মত থাকতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পাশাপাশি আমরা যদি এ সংকটের দ্রুত সমাধানের দিকে না এগিয়ে যাই, তাহলে রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানামুখি জট বেঁধে যেতে পারে যা খুলতে মুশকিল হতে পারে। এ সংকট ভবিষ্যতে অন্য আরো সমস্যা ডেকে আনতে পারে। দেশে ফিরে আসার পর প্রধানমন্ত্রীর উচিত চীন, ভারত, রাশিয়ার মত দেশে ঝটিকা সফর করা।  

আসিয়ানের সদস্য দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মিয়ানমারের কর্মকান্ডের নিন্দা জানিয়েছে। যদিও তারা এর আগে সব বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে একমত প্রকাশ করতো। এবার তারা মিয়ানমার বিরোধী যে অবস্থান নিয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে তাদের মাধ্যমে একটা বিরাট চাপ দেওয়া যেতে পারে আসিয়ানের পক্ষ থেকে।  

আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার এককালে একটা রুদ্ধদার দেশ ছিল। এখন তার দরজা-জানালা খুলেছে। তাই আন্তর্জাতিক চাপকে বেশিদিন গ্রহণ করতে পারবে বলে আমি মনে করি না। বিশ্ববাসীর মনে রাখতে হবে, যারা সন্ত্রাসবাদের মতো যেসব সমস্যা নিয়ে চিন্তিত এবং গভীরভাবে আতঙ্কিত, এ সংকট চলতে থাকলে তা আর একস্থানে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এজন্য বিশ্বের উচিত খুব দ্রুত এ বিষয়ে সমাধানে এগিয়ে আসা। বাংলাদেশ শান্তির পথে সুন্দর একটা উদাহরণ সৃষ্টি করেছে যা বাংলাদেশের ঐহিত্যকেই গৌরবান্বিত করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭
কেজেড/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad