ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

শেষ সময়ে ব্যস্ততা বেড়েছে প্রতিমা শিল্পীদের 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
শেষ সময়ে ব্যস্ততা বেড়েছে প্রতিমা শিল্পীদের  চলছে প্রতিমায় রঙের কাজ-ছবি-দীপু মালাকার

ঢাকা: মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেছে দেবী দুর্গার আগমনী উৎসব। এদিন দেবীর আগমন ঘটেছে মর্ত্যলোকে। দিন কয়েক বাদেই শুরু হবে সনাতনী ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা।

উৎসবকে কেন্দ্র করে শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকাসহ সারাদেশের মৃৎশিল্পীরা। প্রতিবারের মতো এবারও পুরান ঢাকার গলিতে গলিতে পরম যত্নে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে।

বিশেষ করে পূজা-পার্বণের জন্য প্রসিদ্ধ শাঁখারী বাজার, লক্ষ্মী বাজার, শ্যামবাজার, তাতী বাজার, কলতা বাজার, ওয়ারী, মুরগিটোলা, ডালপট্টির মতো ছোট-বড় সব মহল্লায় পূজা মণ্ডপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।  

পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, পূজা আরম্ভের দিন সন্নিকটে হওয়ায় প্রতিমা মণ্ডপে তোলার উপযোগী করে তুলতে দিনরাত কাজ করছেন মৃৎশিল্পীরা। বৃষ্টি থাকায় গ্যাসের ছোট চুলার তাপ দিয়ে প্রতিমা শুকানো হচ্ছে। যেসব প্রতিমা শুকানো হয়েছে সেসবে চলছে রং দেওয়ার কাজ। রং দেওয়া শেষ হওয়া প্রতিমাগুলাতে চলছে শাড়ি পরানোর কাজ।  

চলছে প্রতিমায় রঙের কাজ-ছবি-দীপু মালাকারওয়ারীর ভূতের গলির সামনের এক পাশে বসে প্রতিমা তৈরি করছেন রবীন্দ্রনাথ দাশ। তিনি গত ৪০ বছর ধরে এ এলাকায় প্রতিমা তৈরি করছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবারের মতো এবার তিনজন কর্মচারী নিয়ে ছয় সেট প্রতিমা তৈরি করছি। রোদ কম হওয়ায় গ্যাসের হ্যান্ড চুলাতে প্রতিমা শুকাতে হচ্ছে। প্রতি সেট প্রতিমা ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায় অর্ডার পেয়েছি।  

রবীন্দ্রনাথ পালের সহকারী জয় দেব বলেন, পূজা এসে গেছে। বলতে গেলে রাত-দিনই কাজ করছি। কাজ প্রায় শেষ। অধিকাংশ প্রতিমায় রং দিচ্ছি।  

ডালপট্টির মোড়ে শ্রী শ্রী মদনমোহন গৌর নিতাই বিগ্রহ মন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে, মন্দির গেট দিয়ে সাজানো হচ্ছে। মন্দিরের ভেতরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। মৃৎশিল্পী সুজন পালের বলেন, মাত্র পাঁচ দিনে সাত সেট প্রতিমার রং করার পাশাপাশি কাপড় পরাতে হবে। বিভিন্ন রংয়ের কাপড় থেকে বেছে নির্দিষ্ট রংয়ের কাপড় পরিয়ে ট্রায়াল দিতে হবে। কোনো কোনো প্রতিমায় চার-পাঁচ বার করে কাপড় বদলাতে হচ্ছে। তিনি প্রতি সেট প্রতিমার মজুরি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নিচ্ছেন।  

পুরান ঢাকায় যেসব সংগঠনের উদ্যোগে পূজার আয়োজন করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রতিদ্বন্দ্বী, সংঘ মিত্র, শ্রী শ্রী রাধা মাধব জিউর দেব মন্দির, নব কল্লোল, তাঁতীবাজার পূজা কমিটি,শ্রী শ্রী শিব মন্দির, উদীয়মান সূর্য সংঘ, পানিটোলা পঞ্চায়েত, নবদুর্গা, নববাণী, দুর্গাবাড়ি, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন ও গোয়ালনগর পঞ্চায়েত কমিটি।  

চলছে প্রতিমায় রঙের কাজ-ছবি-দীপু মালাকাররামকৃষ্ণ মঠের দায়িত্বরত স্বামী অমল মহারাজ বাংলানিউজকে বলেন, এবার আমরা গতবারের চেয়েও বেশি টাকা ব্যয় করে প্রতিমা তৈরি করছি।

পূজায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে লালবাগ জোনের ডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান বাংলানিউজকে বলেন, বরাবরের মতো এবারো কঠোর নিরাপত্তার জন্য আইজিপি ও কমিশনার পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন। সেখানে মন্দির পরিচালনা পর্ষদকে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে কি করণীয় তা বলে দেওয়া হয়েছে। লালবাগ বিভাগে ৫৮টি পূজা মণ্ডপ রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রত্যেকটি মণ্ডপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মণ্ডপ পরিচালনা কমিটি সমন্বয় করে কাজ করবে। এছাড়া মণ্ডপে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
ডিআর/আরআর 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।