খাদ্য শস্যের বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও বাজার দর স্থিতিশীল রাখতেই জেলা শহর, উপজেলা ও উপজেলা সদর বহির্ভূত পৌর এলাকায় প্রতিদিন পৌঁনে তিন লাখ টাকা ভর্তুকির মাধ্যমে এসব নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠিকে মূল্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
জেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে জেলা শহরে ১৫ জন ডিলারের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন পাঁচটি বিক্রয় কেন্দ্রে এক টন করে চাল বিক্রি করা হচ্ছে।
এ কার্যক্রমে একজন ব্যক্তি ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি চাল কিনতে পারছেন। প্রতিদিন সারা জেলায় মোট ২৬টি বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে ২৬ টন চাল বিক্রি করা হচ্ছে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন এই কার্যক্রম চলবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ডিলার পর্যায়ে ২৮.৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রিত চালের অর্থনৈতিক ক্রয়মূল্য ৩৯ টাকা। অর্থাৎ কেজি প্রতি ১০.৫০ টাকা ভর্তুকি হিসেবে ২৬ টনে সরকারের ভর্তুকি যাচ্ছে দুই লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, শহরের উত্তর পটুয়াপাড়া, চকরামপুর, বঙ্গজল, কান্দিভিটা, বড়গাছা, নীচাবাজার, কানাইখালী, হাফরাস্তা, দক্ষিণ বড়গাছা, পিটিআই মোড়, তেবাড়িয়া, মল্লিকহাটি, হরিশপুর, বনবেলঘড়িয়া এবং কানাইখালীর শহীদ সেলিম সড়কে পর্যায়ক্রমে চাল বিক্রয় চলছে।
এদিকে বাজার মূল্য অপেক্ষা ওএমএস কর্মসূচিতে চালের মূল্য কম থাকায় কোথাও ক্রেতারা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে চাল সংগ্রহ করছেন। সরজমিনে শহরের পিটিআই মোড়ে চাল বিক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, চাল কিনতে এসে লাইনে দাঁড়ানো পুরুষের চেয়ে নারীদের লাইনের পরিধি বড়।
লাইনে দাঁড়ানো আলেকা খাতুন, ফিরোজা বেওয়া, রিক্সা চালক আফতাব উদ্দিনসহ অন্যান্যরা বাংলানিউজকে জানান, বাজার দর বেশি হওয়ায় লাইনে দাঁড়িয়ে সরকারী চাল কিনছেন তারা। এই চাল বিক্রি চালু রাখলে চালের বাজার দর আরো কমবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে ওএমএস কার্যক্রম চালু ও নাটোরের গুরুদাসপুর ও লালপুর উপজেলায় চালের মিলগুলোতে প্রশাসনের অভিযান পরিচালনার ফলে বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
নাটোরের খুচরা বাজারে বর্তমানে মোটা চাল ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, মাঝারী চাল ৫০ থেকে ৫১ এবং চিকন চাল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিগত দুই-তিন দিনে এই দর গড়ে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ী মিঠু কুমার দাস।
সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের সুফল ক্রেতারা বাজারে পাবেন বলে ধারণা পোষণ করে মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রব খান চৌধুরী আলেম বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকে লভ্যাংশের হার কমে যাওয়াতে কিছু ব্যবসায়ী এবং বড় কৃষক ধান-চাল মজুদ করায় এবং সময়মত এলসি খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করার ফলে বাজারে চালের দর বেড়েছে।
তবে অচিরেই ওএমএস কর্মসূচি চালুর ইতিবাচক প্রভাব চালের বাজারে পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মনিরুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, চালের বাজার দরে স্থিতিশীলতা আনতে প্রশাসনিকভাবে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিংসহ মোবাইল টিম মাঠে রয়েছে। মজুদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
টিএ