ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নতুন স্বপ্নে আগামজাতের সবজি নিয়ে মাঠে কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
নতুন স্বপ্নে আগামজাতের সবজি নিয়ে মাঠে কৃষক সবজির ক্ষেত পরিচর্যায় মগ্ন কৃষক; বগুড়ার মাটিডালি থেকে ছবিটি তুলেছেন আরিফ জাহান

বগুড়া: ঋতু বৈচিত্র্যের ধারায় বিদায় নিয়েছে খরিপ মৌসুম। খরিপে লাগানো প্রায় বিভিন্ন জাতের সবজির প্রায় ৯০ শতাংশ ইতোমধ্যে উত্তোলন করেছেন কৃষকরা।

তবে পরপর হয়ে যাওয়া দু’দফা বন্যায় সবজি আবাদে কৃষকরা এবার তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি।

আবার বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে উৎপাদিত সবজির দাম ভাল পেয়েছেন তারা।

এতে ক্ষতির একটা বড় অংশ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন সবজিচাষিরা।

তাই নতুন স্বপ্নে বুক বেঁধে রবি মৌসুমের আগামজাতের সবজি নিয়ে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। কেউ সবজির জমি তৈরিতে ব্যস্ত। অনেকেই সবজির খেত পরিষ্কারে মগ্ন বীজতলা  পরিচর্যা নিয়েও ব্যস্ত অনেকেই। সব মিলিয়ে আগামজাতের সবজি চাষ নিয়ে কর্মযজ্ঞে লিপ্ত সবজি চাষিরা।

বগুড়ার সবজির জন্য খ্যাত কয়েকটি উপজেলার সবজিচাষিদের সঙ্গে কথা হলে রবি মৌসুমের আগামজাতের সবজি চাষ সম্পর্কে এমন তথ্য ওঠে আসে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলা সদর, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর, গাবতলী, শেরপুর-এই পাঁচটি উপজেলার চাষিরা এগিয়ে রয়েছেন রবি মৌসুমের আগামজাতের সবজি চাষে। এছাড়া পিছিয়ে নেই জেলার অন্যান্য উপজেলার কৃষকরা। তারও কমবেশি সবজি চাষে মাঠে নেমেছেন।

এর মধ্যে শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলার কৃষকরা নানা জাতের সবজি চাষের পাশাপাশি সবজির বীজতলা করে থাকেন। নিজেদের ও স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি বীজ তারা বিক্রি করে থাকেন। দূর-দূরান্তের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ব্যাপারী বা চাষিরা এসব সবজি বীজ কিনতে এখানে আসেন। তাদের কাছে পাইকারি দরে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের সবজি বীজ বিক্রি করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এসব উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে নানা জাতের সবজি লাগিয়েছেন চাষিরা। গত ১৬ অক্টোবর থেকে রবি মৌসুম শুরু হয়েছে। তবে বর্তমানে যে সব সবজি লাগানো হয়েছে বা হচ্ছে তাকে আগামজাতের সবজি বলা হয়ে থাকে। এসব সবজির ফলন তুলনামূলক কম হলেও চাষিরা অনেক বেশি দাম পান। সবজির ক্ষেত পরিচর্যায় মগ্ন কৃষক; বগুড়ার মাটিডালি থেকে ছবিটি তুলেছেন আরিফ জাহান সবজির মধ্যে মূলা, শিম, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, ফুলকপি, করলা, পালংশাক, লালশাক, বরবটি অন্যতম।

বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের মাটিডালী এলাকায় বেশ কয়েকজন কৃষককে দেখা গেলো মূলার খেত পরিচর্যা করতে।

ওসমান গণি, সোলেমান হোসেন, বুলু মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক খেতের মধ্যে গভীর মনোযোগে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে গাছের গোড়ায় চালিয়ে যাচ্ছিলেন পাঁচুন।  খেতের ভেতর জন্মানো আগাছা পরিষ্কার করছিলেন তারা।  পাশাপাশি তারা গাছের গোড়ার মাটি এলোমেলো করে নতুনভাবে বেঁধে দেন।

এসব চাষিরা বাংলানিউজকে জানান, খরিপ মৌসুমের কিছু সবজি এখনো খেতে রয়েছে।  অল্প সময়ের মধ্যে এসব সবজি বিদায় নেবে।  অনেক চাষি ইতোমধ্যেই এসব সবজির টাল ভেঙে নতুন মৌসুমের সবজি চাষের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের  অতিরিক্ত  উপপরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মন্ডল বাংলানিউজকে জানান, জেলার সবজির জন্য খ্যাত উপজেলাগুলোয় রবি মৌসুমের আগামজাতের নানা জাতের সবজি চাষে নেমেছেন চাষিরা।

তবে এ সময়ে বড় পরিসরে সবজি চাষ করেন না তারা  সিংহভাগ চাষি সীমিত আকারে জমিতে সবজি লাগান।  

আগামজাতের এসব সবজি বাজারে ওঠাতে পারলেই ভাল দাম পাওয়া যায়  এ কারণে চাষিরা আগামজাতের সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন যোগ করেন  কৃষি অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়:১৫০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad