ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পানি অধিকার, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নজর দিন

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
পানি অধিকার, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নজর দিন এইচএলপিডব্লিউ সভায় অতিথিদের সারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে: পানিসম্পদকে অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে আয়োজিত পানিসম্পদ বিষয়ক শীর্ষ পর্যায়ের (এইচএলপিডব্লিউ) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, পানি সবার অধিকার।

মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত হয় এই পানিসম্পদের কারণে। আমরা একটি নিরাপদ পানির বিশ্বের স্বপ্ন দেখি।

শেখ হাসিনা বলেন, এইচএলপিডব্লিউ’র সদস্য হিসেবে আমরা পানিসম্পদের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণকে অনুপ্রাণিত এবং এক্ষেত্রে অর্থায়ন ও তার বাস্তবায়নে পরামর্শ দেওয়ার কথা বলে আসছি। ২০১৬ সালে ঘোষিত আমাদের কর্মপরিকল্পনায় পানিসম্পদের বিষয়ে প্রচলিত কার্যক্রমে মৌলিক পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় এই পানি সারাবিশ্বেরই সম্পদ।  

পানিসম্পদের ব্যাপারে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য আমাদের দরকার স্থিতিশীল ও উদ্ভাবনী অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করা। আমরা অবশ্য অংশীদারদের সঙ্গে কিছু উদ্যোগে ভাগাভাগি করে কাজ করছিও।

সবার জন্য নিরাপদ খাবার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে চ্যাম্পিয়নের স্বীকৃতি পেয়েছে জানিয়ে সরকাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটিরও বেশি মানুষের প্রায় সবাই নিরাপদ পানি পাচ্ছে। এখন আমাদের লক্ষ্য, ২০২০ সালের মধ্যে সবাই যেন সরাসরি নিরাপদ পানি পায় তার ব্যবস্থা করা।  

তিনি বলেন, ভূ-উপরিভাগের পানির টেকসই ব্যবহার বাড়াতে আমরা বড় পুকুরসহ জলাধারগুলো পুনরায় খনন করছি। একইসঙ্গে সেগুলোর পানির পরিশোধন প্রক্রিয়া এবং দূষণ ও বর্জ্য নিষ্কাশন থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছি। আমরা বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমরা মনে করি, নতুন প্রজন্মের জন্য এমন বিনিয়োগ শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন প্রচারণাকে এগিয়ে নেবে, যার ওপর গড়ে উঠবে আমাদের দেশ।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়সহ পানি-সংশ্লিষ্ট দুর্যোগের তীব্রতার বিষয়ে বিশ্ব নেতৃত্বকে নতুন করে ভাবার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের দরকার দীর্ঘস্থায়ী কৌশল গ্রহণ। আমাদের হয়তো পানি বিষয়ে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) বৈশ্বিক তহবিল তৈরি করতে হবে, যেন এক্ষেত্রে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির বদলকে সহায়তা করা যায়।

এইচএলপিডব্লিউ’র চূড়ান্ত ফলাফলের প্যাকেজে কিছু দৃঢ় পদক্ষেপের বিষয় গুরুত্ব পাবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্যানেলের এই প্যাকেজ আমাদের পরবর্তী কঠিন কর্মসূচিগুলোর নির্দেশক হিসেবে ভূমিকা রাখবে, যাতে অন্যান্য সরকার ও নেতাদের এই অর্থপূর্ণ পানি ব্যবস্থাপনায় জড়িত করা যায়। আমাদের অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না— স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, অবকাঠামো এবং নগর ব্যবস্থাপনার মতো অন্যান্য এসডিজি খাতে পানিসম্পদের কী তাৎপর্যপূর্ণ ও সংযোগপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় এবং এ খাতে সর্বোচ্চ মনোযোগ ধরে রাখতে স্ব স্ব অঞ্চল এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে সম্ভাব্য সব প্লাটফর্ম কাজে লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।