ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুন্সীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৬ মরদেহ হস্তান্তর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
মুন্সীগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৬ মরদেহ হস্তান্তর ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুর এলাকার আইডিয়াল টেক্সটাইল মিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ছয়জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিহতদের পরিবারকে মিল কর্তৃপক্ষ ৫০ হাজার টাকা, সামিট এলাইন্স পোর্ট লিমিটিডের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার ও জেলা প্রশাসন থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে জেলা প্রশাসন মরদেহ হস্তান্তর ও টাকা দেয়।

প্রতিটি পরিবার ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে পেয়েছে।

নিহত ছয় শ্রমিক হলেন- মানিকগঞ্জের মোহাম্মদ রতন মিয়া (২০), ঝিনাইদহয়ের মোহাম্মদ সজীব (২৪), চুয়াডাঙ্গার মোহাম্মদ ইস্রাফিল (২৬), সিরাজগঞ্জের মোহাম্মদ বাবু (২২) ও মোহাম্মদ নাজমুল হাসান (২২), কারখানার বাবুর্চি বরগুনার হাসিনা বেগম (৬০)।

আইডিয়াল টেক্সটাইল মিল ফ্যাক্টরির কর্তৃপক্ষ সাইফুল ইসলাম লিটন ও মোমেনুল ইসলাম মোমিন বাংলানিউজকে জানান, মালিকপক্ষ দেশের বাইরে থাকায় মরদেহ দাফন ও বহনে প্রতিটি পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মালিকপক্ষ দেশে এলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আরও আর্থিক অনুদান দেয়া হবে।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এডমিন) সাইফুল ইসলাম সবুজ বাংলানিউজকে জানান, মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত করতে সময় লাগায় হস্তান্তরে দেরি হয়েছে।

সামিট এলাইন্স পোর্ট লিমিটিডের চিফ অপারেটিং অফিসার আব্দুল হাকিম বাংলানিউজকে জানান, প্রতিটি পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। নিকটস্থ ফ্যাক্টরি হওয়ায় তাদের এ অনুদান দেওয়া হয়।

মুন্সীগঞ্জের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক জুলিয়া জেসমিন বাংলানিউজকে বলেন, ছয়তলা ভবনে অবৈধভাবে অনুমোদন ছাড়াই ফ্যাক্টরির কাজ চালিয়ে আসছিল আইডিয়াল টেক্সটাইল মিল। ভবনটি শ্রমিকদের খাবার রুম, প্রিন্টিং ও গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করতো। ১৫ দিন আগেও কর্মকর্তারা ওই ভবন পরিদর্শন করেছে। কিন্তু তখন সেখানে ফ্যাক্টরির কোনো কাজ চলছিল না। হঠাৎ করেই তারা গোপনে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করে আসছে, যা আমাদের অগোচরে। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ঢাকা বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডেপুটি ডিরেক্টর দেবাশীষ বর্ধন বাংলানিউজকে জানান, অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল টেক্সটাইল মিলটির। ফায়ার প্রটেকশন ব্যবস্থা এসবের কিছুই ছিল না মিলটিতে। পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের অভাব, বিকল্প সিঁড়ির ব্যবস্থা না থাকা, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের অভাব, প্রতিটি তলাতে পানি না থাকায় শ্রমিকদের প্রাণ যায়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা, সিভিল সার্জন সিদ্দিকুর রহমান, জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট একে এম শওকত আলম মজুমদার, মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসাইনসহ জেলার বিভিন্ন কর্মকর্তারা।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এদিকে নিহত দুই মরদেহ ঘটনার দিন পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলেও পরিবহন সংকটের কারণে মরদেহ মর্গে রাখা হয়। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।