ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

র‌্যাম্প মডেলিং ছেড়ে জঙ্গিবাদে আবু জিবরিল 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
র‌্যাম্প মডেলিং ছেড়ে জঙ্গিবাদে আবু জিবরিল  আটক জেএমবি নেতা মেহেদী

ঢাকা: র‌্যাম্প মডেলিং ছেড়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিবরিল। জেএমবি'র সারোযার-তামিম গ্রুপের 'ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী'র কমান্ডার হিসেব নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।

অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতা দিয়ে সংগঠনের জন্য কর্মী সংগ্রহ করে হিজরতের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন জিবরিল।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্ণেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ এসব তথ্য জানান।

 

এর আগে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর খিলগাঁও বনশ্রী এলাকা থেকে জেএমবি'র সারোয়ার-তামিম গ্রুপের নতুন শাখা ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী কমান্ডার ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিরবিলকে (২৯) আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)। এসময় তার কাছ থেকে ২টি ল্যাপটপ, ১টি মোবাইল, ১টি পাসপোর্ট, জঙ্গি সংক্রান্ত বেশ কিছু উগ্রবাদি বই উদ্ধার করা হয়।  

জঙ্গি আবু জিবরিল পটুয়াখালী জেলার বাউফল রাজাপুরের খোরশেদ আলমের ছেলে।  

২০১৫ সালে র্যাবের অভিযানে পালাতে গিয়ে গ্রেফতার হন জেএমবি’র ‘সারোয়ার-তামিম’ গ্রুপের তৎকালীন আমীর সারোয়ার জাহান ওরফে মানিক ওরফে আবু ইব্রাহিম আল হানিফ। জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাপ্ত আলামতের ভিত্তিতে র্যাব জেএমবি’র আলাদা ‘বদর স্কোয়াড ব্রিগেড’ ও ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’ নামে ২টি ব্রিগেডের তথ্য মেলে। হলি আর্টিজানসহ অন্যান্য হামলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে ‘বদর স্কোয়াড ব্রিগেড’। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বেশ ক’জন সদস্য গ্রেফতার ও নিহত হলে দুর্বল হয়ে পড়ে ‘বদর স্কোয়াড ব্রিগেড’। ‘বদর স্কোয়াড ব্রিগেড’ এর ব্যাকআপ বা রিজার্ভ হিসেবে সক্রিয় হতে শুরু করে ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’।

তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, সম্প্রতি বেশ ক’জন উগ্রবাদী ও জঙ্গি সদস্য গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা তথ্য মেলে এই ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’ এর নের্তৃত্ব দিয়ে আসছিলেন ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিবরিল। ওই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করি।  

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আবু জিবরিল এক সময় র্যাম্প মডেলিং করতেন। সেজন্য ক’টি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক শেষ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন গিফট আইটেমের (শো-পিচ) ব্যবসায় করতেন।

পরবর্তীতে ২০১৫ সালে সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সংস্পর্শে এসে জেএমবিতে যোগ দেন জিবরিল। এরপর র্যাম্প মডেল থেকে হয়ে উঠেন জেএমবি’র ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই কুতনি’ এর কমান্ডার।

র্যাব-৩ এর সিও বলেন, জেএমবি’র ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই কুতনি’ এর কমান্ডার ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিবরিল সংগঠনের কর্মী সংগ্রহ করতেন। একই সঙ্গে আইটি এক্সপার্ট হিসেবে সংগঠনের ঊর্ধ্বতন জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি সাংগঠনিক কাজ গুলো অনলাইনে পরিচালনা করতেন।  

তার বাসা থেকে এ রকম যোগাযোগের তথ্য ভান্ডার পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে গুলশান হলি আর্টিজান ও কল্যাণপুর জঙ্গি আস্তানার জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তার বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আবু জিবরিল র্যাব’কে জানায়, জেএমবি’তে যোগ দেওয়া নতুন কর্মীদের বাইয়্যাত (শপথ) পাঠ করিয়েছেন তিনি। জেএমবি’র ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই কুতনি’তে আনসার (সাহায্যকারী). মুজাহির (যোদ্ধা), সালাফি আলেম বোর্ড এবং অর্থ প্রদানকারী বিভিন্ন ব্যক্তি রয়েছে।

বদর ব্রিগেড দুর্বল হওয়ার পর মূলত: আবু জিবরিলের নের্তৃত্বেই জেএমবি’র ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই কুতনি’ বিভিন্ন অপারেশনাল সক্ষমতা অর্জন ও যে কোনো স্থানে নাশকতা করার মতো পরিকল্পনা নেয় জেএমবি।  

আবু জিবরিলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

**সারোয়ার-তামিম গ্রুপের মেহেদি হাসান আটক 

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
এসজেএ/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।