ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে মিয়ানমার

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে মিয়ানমার

ঢাকা: বিশ্বজনমত জোরালো করার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভূমিকা রাখছেন তার মধ্য দিয়ে জোরালো বিশ্ব জনমত গড়ে উঠবে। আর এই বিশ্ব জনমতের চাপে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার বাধ্য হবে বলে সরকার ও ক্ষমতাসীন এ দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।

 

সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ এবং বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বিশ্ব জনমত গড়ে উঠছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থা ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে অবস্থান নিতে শুরু করেছে। বিভিন্ন দিক থেকে মিয়ানমারের উপর চাপ আসতে শুরু হয়েছে। এই চাপ আরও জোরালো হয়ে উঠবে বলেও তারা মনে করছেন।  

সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকরা বলেন, মিয়ানমারের সরকার ও সেনাবাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এ বিষয়টিও বিশ্ব উপলব্ধি করতে পারছে। মানবিক কারণে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ায় বিশ্ব জনমত বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে। আর এই সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে বিশ্বজনমত আরও জোরালো করার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার অগ্রসর হচ্ছে বলে তারা জানান।  

তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরছেন তাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধসহ বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফেরত নিতে বিশ্ব জনমত আরও জোরালো হবে।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশন চলাকালে বিভিন্ন ফোরামে এই ইস্যুটি তুলে ধরছেন এবং সকলকে এই সংকট নিরসনে সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন।  

বিশেষ করে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার রাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টি এবং কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন। সেই সঙ্গে তিনি জাতিসংঘের অধিবেশনে আসা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সাইডলাইনে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করছেন এবং এই বিষয়টি তুলে ধরছেন।  

সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকরা আরও মনে করেন, রোহিঙ্গা সমস্যা চলমান থাকা অবস্থায় জাতিসংঘের এই অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য অনেক সহায়ক হয়েছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ এই ফোরামের বার্ষিক সাধারণ সভায় বিষয়টি উপস্থাপিত হওয়ার মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এই সমস্যাটি পৌঁছে গেছে। পাশাপাশি এই ইস্যুতে এক সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর ক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে। জাতিসংঘের এই অধিবেশনে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষে একটা জনমত গড়ে উঠেছে। এই অগ্রগতি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতা ও বিশ্ব জনমত জোরালো করতে সহায়ক হবে এবং তা পরবর্তীতে আরও জোরালো হয়ে উঠবে।  

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এই সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতা ও বিশ্ব জনমত গড়ে তোলা ছাড়া অন্য কোনো কিছু আমরা চিন্তা করি না। এই লক্ষ্য নির্ধারণ করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি নিয়ে জোরালোভাবে কথা বলছেন এবং এই সমস্যা সমাধানে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে জোরালো ভূমিকা রাখছেন। আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত থাকবে এবং আরও জোরালো করা হবে। বিশ্ব জনমত আমাদের পক্ষে আছে এবং এটা আরও জোরালো হবে।  

বিষয়টি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমি মনে করি মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। আমরা তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে এ বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিকভাবে আলোচনা করে বিষয়টি তুলে ধরছেন। ইতোমধ্যেই এই সমস্যা সমাধনে আমাদের পক্ষে একটা জনমত তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের অধিবেশনে মধ্যে এই তৎপরতা পরবর্তীতে বিশ্বজনমতকে আরও জোরালো করে তুলবে।  

বাংলাদেশ সময় ০২০০ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭ 
এসকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ