সহিংসতার শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ওই শরণার্থীরা মনে করছেন, দেশের সেনাবাহিনী নির্যাতন চালিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করলেও তাদের পাশে দাড়াননি দেশটির স্টেট কাউন্সিলর বা কার্যত প্রধানমন্ত্রী সু চি।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের বি ব্লকের আমিন মাঝির ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমারের মেরুলা গ্রামের তিন সন্তানের জননী শিরি জামান।
শিরি জামান মন্তব্য করেন, গত প্রায় দুই দশক ধরে নানা নিপীড়নের শিকার হয়ে এদেশে আসছেন রোহিঙ্গারা। সুচি ক্ষমতায় আসার পর তাদের সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে আশা করা হয়েছিলো। কিন্তু এতো নির্যাতনের পরও তিনি পাশে দাড়াননি।
এজন্য সু চিকে ‘ধোঁকাবাজ’ আখ্যায়িত করে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা সু চিকে ভালোবেসেছিলেন। তার জন্য আমরা সব সময় কাজ করেছি। কিন্তু আজ তিনি আমাদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছেন। সেনাবাহিনীর এতো নির্যাতনের পরও সু চি বলছেন, আলেকিন ও আরসা (বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন) সদস্যদের নাকি মারা হয়েছে’।
‘আমাদের সামনে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। নারী ও শিশুরাতো আলেকিন নয়, আরসা নয়। তাদেরকেও হত্যা করা হয়েছে’।
‘আমাদের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করছেন সু চি’- বলেন শিরি জামান।
মিয়ানমারের বুচিডং থেকে আসা আলুম বলেন, ‘অনেক গ্রামে প্রথমে বলা হয়েছিলো যে, আর রোহিঙ্গা মারা হবে না। কিন্তু যখন যুবক ছেলেরা গ্রামে ফিরে আসেন, তখন তাদেরকে একসঙ্গে করে গুলিতে হত্যা করা হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে’।
‘আমাদের সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরিচয়পত্র পাবো কোথায়? অথচ সু চি বলছেন, পরিচয়পত্র ছাড়া ফিরে যেতে পারবেন না রোহিঙ্গারা। আমরা যে সুচিকে এতো ভালোবাসতাম, তার দাম কি? সু চি ধোঁকাবাজ ছাড়া আর কিছুই নন’।
একমাস আগেও যারা ছিলেন মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবার, আজ তারাও স্রেফ পরদেশে আশ্রিত! সারা জীবনের সহায়-সম্বল ও সঞ্চয় হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
নিঃস্ব হয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতে হাঁটা এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মাঝে এখন সু চির সম্প্রতি দেওয়া বক্তব্য নিয়েও ক্ষোভ।
জাতিসংঘ বলেছে, মিয়ানমারে চলমান সহিংসতায় প্রায় ৪ লাখ ১৭ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন কক্সবাজারের ১৫টি ক্যাম্পে। তবে স্থানীয়দের হিসেবে এ সংখ্যা ৮ লাখ ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
ইউএম/এএসআর
কাদায় মাখা শরণার্থী জীবন
২ বছরের কাছেরের দেখাশোনা করে ৩ বছরের লালা
হাসিনার লাই বাঁচি থাক্কি'