ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘নারীদের হিসেবহীন কাজগুলোর স্বীকৃতি প্রয়োজন’

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
‘নারীদের হিসেবহীন কাজগুলোর স্বীকৃতি প্রয়োজন’ উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে: নারীদের হিসেবহীন কাজগুলোর স্বীকৃতি দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নারীদের ক্ষমতায়িত করারও আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে কেউ পিছিয়ে পড়বে না’ বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলের গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে নারীদের হিসেবহীন (সরাসরি অর্থনৈতিক উপার্জনের সঙ্গে জড়িত নয়) কাজগুলোর স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।

নারীকর্মীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং সমাজের গৎবাধা নিয়ম-কানুন ও প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল সেক্টরে নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বিশ্ব কার্যকরভাবে সবার জন্য টেকসই উন্নয়নে সফল হতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা, যথাযথ প্রশিক্ষণ, সমান সুযোগ ও সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারীদের সহযোগিতা করা উচিত’।

বাংলাদেশের নারীদের ক্ষমতায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত রয়েছেন নারীরা।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নারীদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।

তিনি বলেন, ‘নারী শ্রমিক ও উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনা উন্মোচনে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের কার্যক্রমে আমাদের বাজেটের ২৭ শতাংশ বরাদ্দ দিচ্ছি’।

শেখ হাসিনা বলেন, নারীদেরকে সকল অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সামনে আনতে কাজ করছে সরকার।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, সিভিল সার্ভিস, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে ১০ শতাংশ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০ শতাংশ নারীদের জন্য সংরক্ষিত।

মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা, জয়িতা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তৃণমূলের ১৮ হাজার নারী উদ্যোক্তাকে সহায়তা সরবরাহ এবং নারী উদ্যোক্তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি জানান, ১৫ শতাংশ ফান্ড পূর্ণ অর্থায়ন প্রকল্প, ১০ শতাংশ শিল্প প্লট ও ১০ শতাংশ ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রত্যেকটি ব্যাংক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এসব কাজে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

সরকারের ক্ষুদ্রঋণ ও এসএমই ঋণ নারীর ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসে অবদান রাখছে। কমপক্ষে ১০ শতাংশ ঋণ নারী নেতৃত্বাধীন এসএমই প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ রাখার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে বলেই আমাদের অর্থনীতিতে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। তৈরি পোশাক শিল্পে প্রায় ৪ মিলিয়ন নারী কাজ করছেন। দেশের ৩৫ শতাংশ নারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে’।

বাংলাদেশের জিডিপিতে নারীদের অবদান ৩৪ শতাংশ বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সেক্টরে ২০২১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা  আমাদের লক্ষ্য’।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
এমইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।