ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কুলাউড়ার হাজিপুরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একটি গ্রাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
কুলাউড়ার হাজিপুরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একটি গ্রাম কুলাউড়ার হাজিপুরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একটি গ্রাম। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের মন্ধিরা গ্রামটি মনু নদীর গর্ভে বিলীন হতে চলেছে। ৪ দিনের মধ্যে ৫ একর ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

সরেজমিন মন্ধিরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মনু নদীর গর্ভে ৫ একর ভূমির ফসল ও গাছ গাছালি ভেসে গেছে। অসহায় হয়ে পড়েছেন এলাকার লোকজন।

যে কোনও মুহুর্তে নদীগর্ভে চলে যাবে প্রতিরক্ষা বাঁধটি।

প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিলে এলাকাবাসী ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করছেন। কিন্তু তাদের কেউ এলাকাটি পরিদর্শন করতে যাননি।  


এবিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী পাউবো, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান এর কাছে লিখিত আবেদন করলেও কোনও সাড়া মেলেনি। কুলাউড়ার হাজিপুরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একটি গ্রাম।  ছবি: বাংলানিউজ
মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে এলাকার ৭০টি পরিবারসহ ১০টি গ্রামের লোকজন। যে কোনও সময় নদীর মধ্যে বিলীন হতে পারে সংখ্যালঘু ৭০ টি পরিবারের মধ্যে অরণ্য চন্দ্র শীল, সুধাংশু শীল, জয় চন্দ শীল, সুমন চন্দ্র শীলসহ অনেকের বাড়ি। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে মাসুক মিয়ার ফসলী জমিসহ প্রচুর গাছ। নদীর ভাঙ্গন দেখা দিলে কিছু গাছ ও বাঁশ কেটে কোনও রকমে রক্ষা করেছেন।


মন্ধিরা গ্রাম ছাড়াও প্রতিরক্ষা বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে যে গ্রামগুলো প্লাবিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেগুলো হচ্ছে কটারকোনা, বড়খার বাড়ি, দক্ষিণ বারইগ্রাম, বারইগ্রাম, হাসিপুর, উত্তর পলকি, সাধনপুর, মেলাগড় ও বাঁশউরী। এছাড়াও অন্যান্য এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

এখানে একটি মন্দির ও মসজিদ রয়েছে, নদীভাঙ্গন হলে সেগুলোও তলিয়ে যাবে। এই মুহূর্তে প্রতিরক্ষাবাঁধের যে অংশটি রয়েছে সেটি মেরামত করলে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে এলাকার ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি।


অরণ্য চন্দ্র শীল, সুধাংশু চন্দ্র শীল, সুমন শীল বাংলানিউজকে জানান, ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে তাদের বিশাল জায়গা ও গাছ-গাছালি নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ এসে এলাকাটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। অতি দ্রুত বাঁধটি মেরামত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষার দাবী জানান। কুলাউড়ার হাজিপুরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একটি গ্রাম।  ছবি: বাংলানিউজ
জ্যোৎস্না বেগম বাংলানিউজকে বলেন, যেভাবে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে করে ঘরবাড়ি নদীতে তলিয়ে গেলে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো!ভোটের সময় সবাই আসে। ভোট চলে গেলে আর কেউ আর খবর নেয় না।
মন্ধিরা গ্রামের মাসুক মিয়া বাংলানিউজকে জানান, এরই মধ্যে তার তিন একর ফসলি জমি ও গাছ-বাঁশ নদীতে চলে গেছে। কিছুটা কেটে রক্ষা করেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মন্ধিরা গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বাঁধ ভেঙ্গে গেলে আরও দশটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ইউপি সদস্য ফরিদ মিয়া বাংলানিউজকে জানান, তিনি ব্যস্ততার কারণে জায়গাটি দেখতে যেতে পারেননি। তবে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলাপ করেছেন।  

অথচ এই ইউপি সদস্যের বাড়ি ভাঙ্গন এলাকা থেকে অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে।


হাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, তিনি ভীষণ ব্যস্ত বলে এলাকাটি পরিদর্শন করতে পারেননি। তবে সময় করে এলাকাটি ঘুরে দেখবেন। মন্ধিরা ছাড়াও তার এলাকায় আরও কয়েকটি ভাঙ্গন কবলিত গ্রাম রয়েছে।  কুলাউড়ার হাজিপুরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একটি গ্রাম।  ছবি: বাংলানিউজএবিষয়ে মৌলভীবাজার-২ আসনের এমপি আব্দুল মতিন ও কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলতে চাইলে তারা কল রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, নদীর পানি একটু কমলেই তারা কাজ শুরু করবেন। এমূহূর্তে কাজ শুরু করলে বাঁধটি রক্ষা করা যাবে না। ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করার চেষ্টা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
এমএএইচ/ জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।