ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নাটোরে খুচরা বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
নাটোরে খুচরা বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম নাটোরে খুচরা বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম

নাটোর: নাটোরে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে মজুদদারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের অভিযান ও খোলা বাজারে চাল বিক্রি শুরু হওয়ায় খুচরা বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের চাল প্রতি কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা করে কমেছে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব চাল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ওই দুই জাতের চাল বিক্রি হয়েছে প্রকার ভেদে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে।

শহরের কানাইখালী চালপট্টি এলাকার ব্যবসায়ী শামীম হোসেন ও আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, খুচরা বাজারে চালের দাম ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের চাল প্রতি কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা করে কমে গেলেও ক্রেতা নেই। ফলে অধিকাংশ চালের আড়ত বা দোকানদার অলস সময় কাটাচ্ছেন।

অপরদিকে, মিল মালিকরাও বলছেন একই কথা। চালের দাম কমতে শুরু করলেও কেনা-বেচা একেবারেই মন্দা। রেকাত অটো রাইস মিল মালিক রেকাত আলী জানান, খুচরা বাজারে চালের দাম ২/১ টাকা করে কমতে শুরু করলেও ধানের বাজার এখনও উর্ধ্বমুখী। অধিকাংশ মিলে কোনো চাল উৎপাদন হচ্ছে না। বিদেশ থেকেও চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে।

ধানের দাম উর্ধ্বমুখী হওয়ায় সরকারের নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহের চুক্তি করেননি অধিকাংশ মিলার। এতে বাজারে চালের সরবরাহ কম হওয়ায় হঠাৎ করে দাম বেড়ে গেছে। দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো চালের ব্যবসা শুরু করায় মাঝে মধ্যে এমন সংকট দেখা দেয়। চাল আমদানির ওপর শুল্ক কমিয়ে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা আমদানি শুরু করলেও খরচ বেশি হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বন্যার খবর ভয়াবহ আকারে প্রচার হওয়ায় ভোক্তাসহ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তারা বেশি করে চাল কিনে ঘরে মজুদ করেছেন। এতে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার বেশিদিন খোলাবাজারে চাল বিক্রি ও চাল আমদানি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। একই কথা বললেন আরো অনেক মিল মালিক বা চাল উৎপাদনকারকরা।

এদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং বাড়ানোসহ অবৈধ মজুদ ঠেকাতে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। গত তিনদিনে জেলার সাত মিল মালিককে জরিমানা করা হয়েছে বিভিন্ন অপরাধে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চাল মজুদকারী ও মিল মালিকরা।

সোমবারও (১৮ সেপ্টেম্বর) গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারে অভিযান চালিয়ে ভেজাল মিনিকেট বিক্রি, ওজনে কম, অবৈধভাবে মজুদ করা, লাইসেন্স না থাকার অভিযোগে চার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

নাটোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, সোমবার থেকে নাটোরে খোলা বাজারে চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে প্রতিজনকে ৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।

শহর এলাকার জন্য ১৫ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিদিন এক হাজার কেজি করে চাল বিক্রি করবেন তারা। ইতোমধ্যে খোলা বাজারে চাল বিক্রি শুরু এবং চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে মজুদদারদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের কারণে বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। দু’দিনে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালে ২/১ টাকা করে কমতে শুরু করেছে। আগামী দুই একদিনের মধ্যে আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, অতি মুনাফা লোভি ব্যবসায়ীরা মোটা চালকে অটো রাইস মিলে ছেঁটে মিনিকেট বলে বেশি দামে বিক্রি করে ভোক্তাদের সঙ্গে  প্রতারণা করছেন।

অপরদিকে, আগে কম দামে কেনা ধানের চাল মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বেশি দামে তা বিক্রি করছেন। তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।