ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শান্তিরক্ষীদের যৌন আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
শান্তিরক্ষীদের যৌন আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। (ফাইল ফটো)

নিউইর্য়ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে: শান্তিরক্ষীদের হাতে যৌন নির্যাতন ও হয়রানির ইস্যুকে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শান্তিরক্ষীদের দ্বারা যৌন আক্রমণের অভিযোগের বিরুদ্ধে আমাদের নীতি ‘জিরো টলারেন্স’।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
 
যৌন আক্রমণ ও হয়রানি বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যৌন আক্রমণ ও হয়রানি বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিবের মহৎ উদ্যোগের পাশে থাকতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশ এরইমধ্যে এই স্বেচ্ছা চুক্তি অনুমোদন করেছে।
 
জাতিসংঘের ভিকটিম সাপোর্ট ফান্ডে ১ লাখ ডলার অনুদানের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  আমরা বিশ্বাস করি ন্যায়বিচার ও পুর্নবাসন পাওয়া যৌন নির্যাতন ও হয়রানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার।
 
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বোচ্চ ত্যাগ, পেশাদারিত্ব এবং মানুষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধকে সম্মান করে শান্তি প্রতিষ্ঠার অভিযানে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ১৩২ জন বীরসন্তানের আত্মত্যাগ শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রতিশ্রুতি পুর্নব্যক্ত করেছে।
 
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে আর্ন্তজাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে অর্থবহ অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ অবিচল বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
 
তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের হাত শক্তিশালী করতে সব সময় সহযোগিতার জন্য আমরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
 
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা সবগুলো মিশনে গ্রহণযোগ্য ও সুনাম ধরে রেখেছে। আর এটা হয়েছে আমাদের শক্তিশালী নৈতিক মূল্যবোধ, কার্যকর অনুপ্রেরণা এবং উচ্চমানের শৃঙ্খলার কারণে।

যৌন হয়রানির অভিযোগে বাংলাদেশের দুই জনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমরা দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাই। একজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের তাদের নিজের খরচে (দেশে) ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের সব ধরনের জাতিসংঘের দেওয়া ভাতা বাতিল করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নিয়োগের আগে যৌন নির্যাাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে সুরক্ষা বিষয়ে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যৌন নির্যাতন ও হয়রানি যে কোনো অভিযোগ শনাক্তকরণে আমাদের কন্টিনজেন্ট কমান্ডারকে আইনগত ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তারা মিশন এলাকায় অভিযোগের তদন্ত ও বিচার করতে পারেন। সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ শান্তিরক্ষীকে মিশন এলাকায় বাংলাদেশি কোনো শান্তিরক্ষীর অপরাধ কর্মকাণ্ডের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

যৌন সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে নারী নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ২ লাখ নারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে যৌন সহিংসতা বা আক্রমণের শিকার হন।

মুক্তিযুদ্ধে সহিংসতার শিকার নারীদের বীরাঙ্গনা উপাধি দেওয়া এবং পুনবার্সনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথাও বক্তৃতায় উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতিয়েরেস। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাওলি নিনিস্তো, উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট তাবারে ভাজকেজ, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাইলেমরিয়ম দেসালেগান, জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট মিরোস্লাভ ল্যাজক্যাক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/

জাতিসংঘ সংস্কারে ট্রাম্প আয়োজিত সভায় হাসিনার অংশগ্রহণ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ