ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিংড়ায় গৃহবধূকে হত্যার রহস্য উদঘাটন, দেবর গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
সিংড়ায় গৃহবধূকে হত্যার রহস্য উদঘাটন, দেবর গ্রেফতার গ্রেফতার দেবর বাবু আলী ও তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল

নাটোর: নাটোরের সিংড়া উপজেলায় শাপলা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় দেবর বাবু আলীকে (১৮) গ্রেফতার করা হয়েছে।

ওই হত্যাকাণ্ডে গৃহবধূর দেবর বাবু আলী ও তার বন্ধু রহিম হোসেন (১৯) সরাসরি জড়িত ছিলো বলে তারা আদালতের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাবু আলী উপজেলার গটিয়া গ্রামের আব্দল আজিজের ছেলে।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে নাটোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো. আব্দুল হাই বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি  বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে গৃহবধূ শাপলা হত্যার প্রধান আসামি বাবু আলীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় হত্যা কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ভাবি শাপলার কাছ থেকে নেওয়া এক লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন বাবু। অপর আসামি বাবুর বন্ধু রহিমকে গ্রফতারের চেষ্টা চলছে।  

তদন্তের স্বার্থে সাময়িকভাবে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানানো হয়নি বলে জানান তিনি।

ওসি বলেন, রোববার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার মূল কারণ, পরিকল্পনা এবং কিভাবে কোথায় তাকে হত্যা করা হয়েছে তা বিস্তারিত তথ্য দেয় বাবু আলী। এ সময় আদলতে বিচারক ১৬৪ ধারায় তার  জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

জবানবন্দিতে বাবু উল্লেখ করে, বাবুর বড় ভাই হোসেন আলি প্রায় দুই বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যর দেশ ওমানে যান। এই সুযোগে আসামি বাবু তার ভাবি শাপলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ইত্যোবসরে তার ভাবি শাপলা বেগম পরকিয়া প্রেমিক দেবর বাবুকে জানায় তিনি মা হতে চলেছেন। এজন্য বাবুকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন শাপলা বেগম।

এক পর্যায়ে কৌশলগত ভাবে ভাবির বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হন বাবু। চলতি বছরের ২৭ মে রাত ১২টায় শাপলা দুই বাচ্চা রেখে দেবর বাবু এবং তার বন্ধু রহিমকে নিয়ে মোটরসাইকেলে অজানা উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে সিংড়া এলাকায় শাঐল গ্রামে রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দু’জন মিলে চাকু দিয়ে ভাবি শপলা বেগমকে জবাই করে। এ সময় ওই গৃহবধূর সঙ্গে থাকা এক লাখ টাকা ও তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়ে বাবু ও তার বন্ধু রহিম।

পরদিন ২৮ মে রাত ৮টার দিকে স্থানীয়রা মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।

পরে এই ঘটনায় শাপলার ভাই আশরাফ হোসেন বাদী হয়ে সাত জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়র করেন।

এ ঘটনার পর থেকে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আসামি বাবুকে নাটোর ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার করে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৪২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।