ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গুলিতে ঝাঁঝরা, শরীরে পচন সাব্বিরের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
গুলিতে ঝাঁঝরা, শরীরে পচন সাব্বিরের আহত রোহিঙ্গা যুবক সাব্বির। ছবি: দীপু মালাকার

আঞ্জুমানপাড়া, পালংখালি, উখিয়া, কক্সবাজার: ২০ দিন আগে যখন বুথেডং প্রশাসনিক এলাকার টমপাড়া গ্রামের ছো প্রং পাড়ায় সেনা অভিযান শুরু হয়, তখন পরিবারের সবার সঙ্গে সেও পালানোর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সবাই পালাতে পারলেও পালাতে পারেনি সাব্বির। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রকেট লঞ্চারের স্প্লিন্টারে ক্ষত বিক্ষত হয়ে ধানক্ষেতে পড়েছিলো সে।

সেভাবেই সারা রাত শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হয়। কখন যে সে জ্ঞান হারিয়েছিলো তা তার খেয়ালও নেই।

যখন জ্ঞান ফিরলো তখন সে দেখলো, একটি বড় পাহাড়ের ওপর বড় গাছের গুড়ির সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা হয়েছে তাকে। সারা শরীর জুড়ে ক্ষত। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ও কষ ঝরে পড়ছে। ক্ষতের ওপর লতাপাতার আস্তরণ লাগানো। তাকে ঘিরে রয়েছে পরিবারের সব সদস্য।

আমি যে সাব্বিরের কথা বলছি, তার বয়স ১৬ বছর, বাবার নাম গুরা মিয়া, আর মা ছমুদা খাতুন। বড় দুই ভাই হারুন ও রেজাউলের কাঁধে করে ঝোলানো চেয়ারে নিয়ে আসা হয়েছে তাকে। আজই (১৫ সেপ্টেম্বর) সীমান্ত পার হয়েছে তারা তিন ভাই।
আহত রোহিঙ্গা যুবক সাব্বির।  ছবি: দীপু মালাকারআঞ্জুমান পাড়ার বাজারে একটি দোকানের সামনে ছায়ায় রাখা হয়েছে সাব্বিরকে। উৎসাহী সবাই তাকে ঘিরে রাখলেও কেউ তার পঁচে যাওয়া শরীরের চিকিৎসার কথা বলছে না। ত্রাণকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয়, সবাই কেবল তার ভিডিও ও ছবি তুলতেই ব্যস্ত।

চিকিৎসকের কাছে যায়নি কেনো জানতে চাইলে সাব্বির বলে, তারা তিন ভাই এখানকার কিছুই চেনে না। পরিবারের অন্য সদস্যরা এখনো সীমান্ত পার হতে পারেনি, পথে আছে বলেই তারা এখানে অপেক্ষা করছে।

দেখা গেলো তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে গুলির আঘাতে বড় বড় ক্ষত তৈরি হয়েছে। কোন রকম চিকিৎসা ও ওষুধ ছাড়া জঙ্গলের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকায় ক্ষতগুলোতে এরইমধ্যে বড় ধরনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। সংক্রামিত স্থানে মাছি বসে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। দ্রুতই তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
আরএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad