ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শৃঙ্খলাহীন ত্রাণ বিতরণ

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭
শৃঙ্খলাহীন ত্রাণ বিতরণ রোহিঙ্গা-ছবি দীপু মালাকার

উখিয়া, কক্সবাজার: মিয়ানমার থেকে আশা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সারাদেশ থেকে আসছে ত্রাণ। প্রতিদিনই শতশত ট্রাকে এসব ত্রাণ নিয়ে আসছেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দুর্বলতা, প্রশাসনিক অদক্ষতা, অনভিজ্ঞতা ও অবহেলায় ত্রাণ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা।  

অন্যদিকে, ত্রাণের নামে অনেকে রোহিঙ্গাদের দিচ্ছে ব্যবহার অনুপোযোগী পুরোনো কাপড়। আবার ব্যবহার করা যায় এমন ত্রাণেরও অনেকটা অপচয় হচ্ছে।

প্রায় অর্ধেক ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে আগে আসা রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রাই। অন্যদিকে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যেও অনেকে বারবার ত্রাণ নিচ্ছে। ফলে প্রচুর ত্রাণ থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ ত্রাণ পাচ্ছে না।

এতে একদিকে যেমন মানবিক বিপর্যয়ের শংকা দেখা দিয়েছে, তেমনি হুড়োহুড়ি করে ত্রাণ নিতে গিয়ে আহত হচ্ছে অনেকে। এতে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে খোদ রোহিঙ্গারাই।
বাংলানিউজ
অন্যদিকে, ত্রাণ দিতে আসা অনেকেই এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেছে। দ্রুত কেন্দ্রীয়ভাবে সেল গঠনের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করার তাগাদা দিয়েছে তারা।  

টেকনাফের সাবরাংয়ের হাড়িয়াখালি এলাকা থেকে উখিয়ার কুতুপালং পর্যন্ত সড়কে ত্রাণ নিতে গিয়ে গাড়ির নিচে পড়ে এ কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিগত এক সপ্তাহে টেকনাফ রোডের প্রায় সবখানেই দৌড়ে আসা শতশত শরণার্থীর মধ্যে গাড়ি থেকে ত্রাণ ছুড়ে মারতে দেখা গেছে। এতে কেউ একাধিক প্যাকেট পাচ্ছে। আবার কেউ হয়তো পাচ্ছেই না। ত্রাণ পাওয়ার প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না নারী ও বৃদ্ধরা। অথচ মোট শরণার্থীর প্রায় ৬০ ভাগই নারী ও বৃদ্ধ।

ঢাকা থেকে ত্রাণ দিতে যাওয়া উন্নয়নকর্মী ইবনুল হাসান রানা ত্রাণ বিতরণের এ অব্যবস্থাপনাকে চরম অপমানজনক ও অসম্মানের বলে উল্লেখ করেছেন।  

প্রশাসনিক এ অদক্ষতার কথা বিবেচনা করে তিনি এ কাজে দ্রুত সেনাবাহিনী মোতায়েনেরও দাবি জানান।

উখিয়ার পালংখালি ইউনিয়নের আঞ্জুমান পাড়ার চিংড়ি ঘেরের পাশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে ত্রাণ দিতে এসেছে সাতকানিয়ার চুনতি গ্রামের মানুষ। তাদের ত্রাণ দেয়ার কৌশলটা ছিলো অনুকরণীয়। এই দলের নেতা প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাস্মদ জয়নুল আবেদিনের বড় ভাই ইসমাইল মানিক।

তিনি বলেন, ত্রাণের নামে যে পুরোনো কাপড় দেয়া হচ্ছে তা কাজে লাগছে না। সারা সড়কের পাশে সেই কাপড় পড়ে রয়েছে। এদের প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে ত্রাণ দেয়া উচিত। ত্রাণ বিতরণে শৃঙ্খলা আনা উচিত। এক্ষেত্রে কোনো শৃঙ্খলা নেই। ফাঁকা স্থানে সবাইকে জড়ো করে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ত্রাণ দিতে হবে।

একাধিক রোহিঙ্গা দাবি করেছে, যেভাবে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তাতে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয়রা ও আগে আসা রোহিঙ্গারা ত্রাণ দখল করে নিচ্ছে। নতুনরা কাছেই ভিড়তে পারছে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
আরএম/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।