শুদ্ধ বাংলা ভাষাকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ও শুদ্ধ বাংলাকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে দেশের স্কুলগুলোর ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছিল চ্যানেল আই-এর বাংলা ভাষা নিয়ে মেধাভিত্তিক টিভি রিয়েলিটি শো "ইস্পাহানী মির্জাপুর বাংলাবিদ মহোৎসব"।
শুদ্ধ বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ বাংলাবিদের খোঁজে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে শুরু হয় এ প্রতিযোগিতাটি।
এবারের সেরা বাংলাবিদের মুকুটটি ছিনিয়ে নিয়ে ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি পেয়েছে ঢাকার ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত সায়েম। এছাড়া দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে তিন লাখ টাকার মেধাবৃত্তি পেয়েছে খুলনার সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিরাজুল আরিফিন। তৃতীয় স্থান অর্জন করে দুই লাখ টাকার মেধাবৃত্তি পেয়েছে যৌথভাবে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রাইসুল সালসাবিল এবং ঢাকার সেন্ট জোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি হাইস্কুলের শিক্ষার্থী শোয়েব সানিয়াদ খান তূর্য।
সেরা ছয়-এর বাকি দু’জন সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রতীক প্রণতীর্থ এবং খুলনা জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সমর্পন বিশ্বাস। এছাড়া সেরা ১০ জনের প্রত্যেককে দেয়া হয় একটি করে ল্যাপটপ, ইস্পাহানির উপহার সামগ্রী এবং ব্যক্তিগত লাইব্রেরি করার জন্য ৫০ হাজার টাকার বই ও আলমারি।
চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরের সভাপতিত্বে চূড়ান্ত পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ইস্পাহানি লিমিটেডের উপদেষ্টা জাহিদা ইস্পাহানি, প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা সাইদ হাসান, মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নান প্রমুখ।
মন্ত্রী এসময় বলেন, ছোটবেলা আমি বাংলা বানানে পারদর্শী ছিলাম না। তবে পরে শিখেছি জাতিগত দায়িত্ববোধ থেকে। বর্তমানে বাংলা বানান ও উচ্চারণ ঝুঁকির মুখে। আর বাংলা নাটকে যে উচ্চারণ করা হচ্ছে তা অবশ্যই বর্জন করা উচিত। শিল্পকে সবসময় সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করতে হয়। নইলে তার মান থাকে না।
এছাড়া ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, চ্যানেল আইয়ে ১৯ বছর ধরে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোতে বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা ব্যবহার করা হয়নি। ৩৫ হাজার বাংলাবিদের কথা আমরা শুনেছি। তাদের মধ্যে ৮০ জন প্রতিযোগীকে নিয়ে চ্যানেল আই-এর মঞ্চে মূল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতায় প্রধান বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। এছাড়া কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের উপস্থিতির কথা থাকলেও বিশেষ কাজে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রশ্নোত্তর পর্ব, হিজিবিজি অক্ষর গুছিয়ে শব্দ গঠন, ভুল বাক্য সংশোধন এবং শাইখ সিরাজের কৃষি বিষয়ক প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সাবিনা ইয়াসমিন ও রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা গান পরিবেশন করেন। এসময় বিশেষ অনুরোধে মাহিদুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করে শোনান আসাদুজ্জামান নূর।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
এমএএম/এসআই