ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মহাসড়ক না আবর্জনার ভাগাড়!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
মহাসড়ক না আবর্জনার ভাগাড়! মহাসড়কে আবর্জনার ভাগাড়, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: তিনলেনের সড়ক। সরু হতে হতে একলেনে কোনো মতে যানবাহন চলাচল করে। অবশিষ্ট দুটি লেন দখলে! তাও আবার ময়লার দখলে!

কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় গড়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। দুর্গন্ধময় পরিবেশে নাক চেপে স্থানটি অতিক্রম করেন পথচারীরা।

সরু রাস্তায় নিয়মিত যানজটে আবর্জনার সামনে আটকে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন যাত্রীরা।

এ চিত্র ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ব্যস্ততম সাভার বাসস্ট্যন্ডের পূর্ব দিকের। সেখানে মার্কেটগুলোর সামনের রাস্তা দখল করে দিনের পর দিন এভাবেই গড়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়।

সপ্তাহ পার হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সড়ক ব্যবহার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলেন গাজীপুরের কাশিমপুরে; শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল হাসপাতালে। মহাসড়কে আবর্জনার ভাগাড়, ছবি: বাংলানিউজকেবলমাত্র সেদিন সকালটায় আবর্জনামুক্ত মহাসড়ক দেখেছিল সাভারবাসী। তবে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীতে ফেরার পথে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গেই পুরনো চেহারার ফিরে আসে এই মহাসড়ক।

‘‘একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের সময়টাতেই মহাসড়কে আবর্জনা থাকে না। তিনি ছাড়া খোদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীসহ অন্যান্য ভিআইপি, কূটনীতিক কিংবা বিদেশি অতিথিদের এই ময়লা মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হয়। বেশ কয়েকদিন আবর্জনার সামনে গাড়ি থামিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্থানীয় ইউএনও ও মেয়রকে ফোন করে ভৎসনা করেছেন। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি,’’ অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গেই বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদের একজন কর্মকর্তা।

সিটি সেন্টারের ঠিক উল্টো দিকে রাজ্জাক মার্কেট নামে কাঁচাবাজার। তার সামনে মাছের বাজার ঘেঁষেই দুই লেনজুড়ে আবর্জনার ভাগাড়। মার্কেটের পানি ফেলতে ফেলতে সড়কে গভীর গর্ত। সেখানটাতেও আবর্জনা ফেলে পুরো দুটি লেন চলে গেছে দখলে। একই অবস্থা কয়েক গজ দূরে চৌরঙ্গী মার্কেটের সামনেও।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জাহিন সিংহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘মহাসড়ক দখল করে আবর্জনার ভাগাড় গড়ে তোলা হলেও তা দেখার কেউ নেই। এখানে বাস থেকে উঠতে বা নামতে গেলেই বমি আসে। ’’

সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, ঢাকা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সবুজ উদ্দিন খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ব্যস্ততম মহাসড়ক দখল করে এভাবে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত করা এটা কোনো সভ্যতার মধ্যে পড়ে না। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, সাভার পৌরসভার আবর্জনাগুলোই আমাদের সড়কে ফেলা হচ্ছে। ’’মহাসড়কে আবর্জনার ভাগাড়, ছবি: বাংলানিউজসড়ক ও জনপথ অধিদফতর, কল্যাণপুর উপ-বিভাগের প্রকৌশলী মনসুরুল আজিজ তারেক বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা মহাসড়কে না ফেলতে চিঠি এমনকি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীকে ব্যক্তিগতভাবে অবহিত করেও কোনো সাড়া মেলেনি। ’’

সাভার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল গনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব নিজেদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা। কিন্তু তারা নির্দিষ্টস্থানে না ফেলে সরাসরি মহাসড়কে ফেলছেন। এতে দিনে দিনে জমে এমন পরিস্থিতি। আমরা তাদের নোটিশ দিয়ে ময়লা আবর্জনা মহাসড়কে না ফেলার নির্দেশ দিয়েছি। তবে কাজ হয় না। ’’

রাজ্জাক মার্কেট কাঁচাবাজারের মালিক আব্দুর রাজ্জাক নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘সবার দেখাদেখি আমাদের ব্যবসায়ীরাও এখানে আবর্জনা ফেলেন। স্থায়ী ভাগাড়ে পরিণত হওয়ায় এখন আশেপাশের ব্যবসায়ীরাও ফেলে যান। আমি ডাস্টবিন বানিয়ে দিয়েছি। কিন্তু সবাই ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন মহাসড়কে। ’’

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।