শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) একদিনে আড়াই লাখ তালের চারা রোপণের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে আঁটঘাট বেঁধে। এদিন উপজেলার প্রত্যেকটি রাস্তার দু’পাশে, জমির সীমানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য সরকারি স্থাপনা এবং সরকারি খাস জমির সীমানা, হাওর-বাওড়, ঘের ও পুকুর পাড়, কল-কারখানার সীমানায় (মালিকের অনাপত্তি সাপেক্ষে) তালের বীজ রোপণ করা হবে।
গত ০৭ সেপ্টেম্বর মনদীপ ঘরাই নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় বাস্তবায়নে স্বপ্ন দেখেছিলাম, শুরুটা করবো দশ হাজার তালের চারা রোপণের মধ্য দিয়ে, তবে সে কাজে সাফল্য সাহস দিয়েছে ভবিষ্যতে ভাবনার ডানা মেলবার। দশ থেকে পঞ্চাশ হাজার, সেখান থেকে এক লাখ। লাখের স্বপ্ন পেরিয়েছে বহুপথ। লক্ষ্য এখন একদিনে অভয়নগর উপজেলায় আড়াই লাখ তালের চারা (বীজ) রোপণের। সবাই মিলে চাইলেই পারি এ স্বপ্ন সফল করতে। এ অর্জন হবে আমাদের, অভয়নগরের। ফলে আপনার/প্রতিষ্ঠানের প্রদানযোগ্য তালের চারা/বীজের সংখ্যা নিরুপণ করে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কাছে রেজিস্ট্রেশন করুন। তবে কোনো নগদ অর্থ গ্রহণযোগ্য নয়। প্রয়োজন হলে তালের চারা সংগ্রহের তথ্য দিতে পারবো আমরা। আপনি একটি তালের চারাও দিতে পারেন, আবার হাজারেও আপত্তি নেই। তবে মন থেকে সঙ্গে থাকলেই আমরা তুষ্ট।
নওয়াপাড়া শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুনীল দাস বাংলানিউজকে বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনদীপ ঘরাইয়ের ফেসবুকে স্ট্যাটাসের পরে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান শেখ নাসির উদ্দিনের মতো শিল্পপতি থেকে শুরু করে শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও তালের আঁটি সংগ্রহ শুরু করে। আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান মিল শ্রমিকদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে নির্দেশ জারি করেন, উপজেলা প্রশাসনকে তালের চারা দেওয়ার জন্য মিলে আসার সময় প্রত্যেক শ্রমিক একটি করে হলেও তালের চারা এনে জমা দেবে। তেমনি, অভয়নগরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও ভূমি কর্মকর্তার আহ্বানে সাঁড়া দিয়ে তালের চারা সংগ্রহে নেমে পড়েন। বর্তমানে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে, আগামী দু’দিনের মধ্যে লক্ষ্য অর্জন হবে।
এ বিষয়ে মনদীপ ঘরাই বাংলানিউজকে বলেন, ভিন্নতর উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তালের চারা সংগহ নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ স্যারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি এ কাজে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই থেকে দেরি করিনি একটুও, ঘুরে বেড়াচ্ছি স্কুল থেকে স্কুলে, উদ্বুদ্ধ করেছি শিক্ষার্থীদের।
‘প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে (ক্রয় ব্যতীত স্থানীয় প্রাপ্যতা সাপেক্ষে) তালের চারা নিয়ে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্যারের নির্দেশনা মতো বেঁধে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ও। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে একদিনে উপজেলাব্যাপী আড়াই লাখ তালের চারা রোপণ করা হবে। ’
এরআগে বৃষ্টিতে ভিজে খাল দখলমুক্ত করতে নেট-পাটা উচ্ছেদ ও পরে কচুরিপানা পরিষ্কারে খালে নামেন মনদীপ ঘরাই। এছাড়াও সহকারী ভূমি কমিশনার হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি অফিস দালালমুক্ত করেন। ভূমি অফিসের মধ্যে অরক্ষিত জায়গা পরিপাটি করে গড়ে তোলেন মুক্তিযুদ্ধ অঙ্গন। যেখানে যশোরের মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র ও ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।
**কচুরিপানা পরিষ্কারে খালে নেমে পড়লেন ইউএনও
বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
এএ